রাজনৈতিক সুবিধার জন্য বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে, এই সময় সহযোগিতা আশা করেছিলাম, ভিডিও কনফারেন্সে মোদীকে মমতা
কোভিড পর্বের শুরু থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে তর্ক বিতর্কের তুফান। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দল নিয়ে যা চরমে পৌঁছয়। অভিযোগ সেই দলের দমদমে নামার ঘণ্টা তিনেক পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তখনই তিনি জানান কেন্দ্রীয় দলের কথা। এতে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী কড়া চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রীকে। তারপর থেকে চড়া সুরেই বাঁধা কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক।
করোনা মোকাবিলায় তৃতীয় পর্বের লকডাউন শেষের আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পঞ্চম ভিডিও বৈঠকে মমতা ব্যানার্জি সরাসরি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক সুবিধার জন্য বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে। মমতার কথায়, অতিমারির সময় যখন কেন্দ্রের কাছে সহযোগিতা আশা করে সব রাজ্য, তখন আচমকা না জানিয়ে কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে দেওয়া হল! তাঁদের নিয়েই ব্যস্ত থাকলেন রাজ্যের পদস্থ আমলারা। কেন্দ্রের কাছে সহযোগিতা আশা করেছিলাম, প্রতিযোগিতা নয়। মমতা বলেন, এভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে বুলডোজ করা উচিত নয়।
কেন্দ্রীয় দল, ত্রুটিপূর্ণ কিট কিংবা রাজ্যপাল। এর আগে কেন্দ্রের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে নবান্ন। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের ব্যর্থতার অভিযোগ করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। বলেছিলেন পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর সামনেও কার্যত একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল মমতার গলায়।
মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নির্দেশ মতোই চলেছে রাজ্যগুলো। এখন যখন লকডাউনের পরও প্রত্যাশিত ফল মিলছে না, তখন তার দায় রাজ্যগুলোর কাঁধে ঠেলে দেওয়া ঠিক নয়। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার সব খুলে দিয়ে রাজ্যগুলোকে বলছে কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করুন। এটা পরস্পর বিরোধী। মমতার দাবি, কোথায় লকডাউন করা হবে আর কোথায় তোলা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হোক রাজ্যকে। গ্রাউন্ড রিয়্যালিটি বুঝতে সমস্যা হচ্ছে কেন্দ্রের।
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো নিয়েও এদিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের মত ব্যক্ত করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাইকে ঘরে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের টিকিটের খরচ দিতে না চাইলে রাজ্য তা দিয়ে দেবে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থেরও দাবি করেছেন মমতা ব্যানার্জি। পাশাপাশি দাবি রেখেছেন, রাজ্য যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে পারে, তার সম্মতি দিক কেন্দ্র।