সংঘের বিরুদ্ধে বিভেদমূলক রাজনীতির অভিযোগ তুলে দেশে ভুয়ো এনকাউন্টার নিয়ে সরব মানবাধিকার কর্মীরা

শুক্রবার কলকাতার সুবর্ণ বণিক হলে রাজ্যের ১৮ টি মানবাধিকার ও গণ সংগঠনের ডাকে এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ‘ফেক এনকাউন্টার অ্যান্ড ওয়ার অন পিপল’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বক্তারা একযোগে সংঘের বিরুদ্ধে বিভেদ মূলক রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। পাশাপাশি, দেশে যেভাবে জাতি বিদ্বেষ ও ভুয়ো সংঘর্ষে খুনের ঘটনা বাড়ছে তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে বম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও গণ আন্দোলন কর্মী বিজি কোলসে পাটিল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোনও সাংবিধানিক পদে থাকারই অধিকার নেই, গুজরাত দাঙ্গার জন্য তাঁর বিচার প্রয়োজন।

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রর ভিমা-কোরেগাঁওয়ে দলিত সংঘর্ষের যে ঘটনা চর্চায় উঠে এসেছে এবং সেই সঙ্গে এলগার পরিষদ নামে এলাকার যে সংগঠনের নাম উঠেছে, তার আহ্বায়ক বিশিষ্ট এই সমাজকর্মী এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, সেদিনের কর্মসূচির সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও যোগ ছিল না। ইচ্ছা করে তাদের সাথে মাও যোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। সংঘের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকেও তিনি আক্রমণ করে বলেন, ১৯৯৩ সালের মুম্বই হামলায় যে আরডিএক্স ব্যবহৃত হয়েছিল, তা এদেশে এসেছিল ১৯৯২ এর অক্টোবর মাসে। তাই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা হিসাবে ওই হামলা বলে সংঘ যা প্রচার করে থাকে, তা ঠিক না। তিনি আরও বলেন, ১৯৮৪ এর শিখ দাঙ্গায় ধৃতদের মধ্যে ৫০ জন ছিলেন সংঘ কর্মী।

এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গত বছর জুন মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে খুন হওয়া পরেশনাথ পাহাড় এলাকার চা বিক্রেতা মোতিলাল বাস্কের স্ত্রী পার্বতীদেবী। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে মাওবাদী তকমা দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর স্টারলাইট প্রকল্পের আন্দোনলকারীদের হয়ে লড়াই করা আইনজীবী এস ভাঞ্চিনাথন এদিনের সভায় জানান, আন্দোলনকারীদের হয়ে সওয়াল করায় তাঁকে গ্রেফতার করে কীভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। তাঁর দাবি, বেঁচে থাকতে তিনি ওই রাজ্যে বিজেপি-আরএসএসকে দাপাদাপি করতে দেবেন না। মণিপুরের সমাজকর্মী বসন্ত কুমার ওয়েরেপ্পাম এদিন আফস্পার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কীভাবে সেনার অত্যাচার নামিয়ে আনা হচ্ছে তার বিবরণ দেন। যেভাবে হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে জাতের নামে নির্যাতন চালনো হচ্ছে এবং বিরোধ দেখলেই সরকার তা দমনে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ আনছে, সেই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এই সভায়। এর প্রতিবাদে দলিত, সংখ্যালঘু, সমাজ কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সাধারণ মানুষ সবাইকে একযোগে প্রতিবাদ করতে হবে বলে এদিনের সভায় জানান বক্তারা।

Comments are closed.