দলবদলের মরসুমে ‘বেসুরো’ সাধন পাণ্ডে- রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য! বিজেপিতে?

রাজ্য বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই উঠছে দলবদলের হিড়িক। প্রায় প্রতিদিনই নেতাকর্মিদের তৃণমূল থেকে বিজেপি এবং বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদান অব্যাহত। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের দুই প্রবীণ নেতা সাধন পাণ্ডে ও রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে নিয়ে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই দলের এক শ্রেণির নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ও সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। প্রয়োজনে দল ছাড়তে দ্বিধা করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তৃণমূলের দুই প্রবীণ নেতা ঠিক কী অভিযোগ করেছেন?

তৃণমূলের ২৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের এক কর্মসূচিতে অংশ নেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। সেখানে তাঁর মন্তব্য, দলের নানা পদে ও দায়িত্বে অনেক ‘খারাপ লোক’ বসে আছেন । তৃণমূলের ভালোর জন্য ওই নেতাদের বের করে দেওয়া উচিত বলে সুর চড়ান তিনি।

সাধনবাবুর সঙ্গে উত্তর কলকাতার আর এক তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ও মন্ত্রী শশী পাঁজার সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। একাধিকবার তাঁদের সমর্থকরা দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভার ব্যর্থতা নিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে একহাত নিয়েছিলেন সাধন। এবার আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগেো কোনও রাখঢাক না রেখে দলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে সাধনের এই ক্ষোভপ্রকাশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে ‘বেসুরো’ সাধনকে বাইরে ‘ওস্তাদি’ না করার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাধনের মন্তব্য নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘কোনও বক্তব্য থাকলে সেটা দলের অন্দরে জানান, বাইরে বলে ওস্তাদ হওয়ার দরকার নেই।’

অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেই প্রকাশ্যে বিবাদে জড়িয়েছেন তৃণমূলের আরও দুই বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও বেচারাম মান্না। ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ জনসমক্ষেই জানিয়ে দিয়েছেন তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাকে সিঙ্গুরে প্রার্থী করা হলে কোনওভাবেই তাঁকে সমর্থন করবেন না।

বেশ কিছুদিন ধরে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ। বেচারাম ঘনিষ্ঠ গোবিন্দ ধাড়াকে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি করাতেই এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। গোবিন্দর নামে দুর্নিতির অভিযোগ থাকায়, তাঁকে ওই পদে মেনে নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। এমনকি প্রয়োজনে দল ছাড়তেও পারেন হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। এই প্রেক্ষিতে আবার শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব ব্যানার্জির মতো সিঙ্গুরে মাস্টারমশাই হিসেবে পরিচিত রবীন্দ্রনাথের নামে হুগলি জুড়ে পোস্টার দেখা গিয়েছে। সেখানে লেখা ‘আমরা স্যারের অনুগামী’। দলবদলের মরসুমে এই দুই তৃণমূল নেতার বিদ্রোহ মোটেই তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তিদায়ক হবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Comments are closed.