বাঁধ বাঁচাতে জীবন বাজি গ্রামবাসীদের, ভাইরাল ভিডিও

বুধবার যশ ও ভরা কোটালের সাঁড়াশি আক্রমণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

সমুদ্রের সর্বগ্রাসী ঢেউ ঘন ঘন আছড়ে পড়ছে বাঁধে। যে কোনও সময় বাঁধ ভেঙে নোনা জল ভাসিয়ে নিয়ে যাবে গোটা গ্রামকে। বালির বস্তা, মাটি ফেলেও বাঁধকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। উপায় না দেখে বাঁধ বাঁচাতে জীবন বাজি রাখলেন একদল গ্রামবাসী। প্রবল বিপর্যয় রোধ করতে বাঁধের ধারে সারিবদ্ধ ভাবে শুয়ে পড়লেন তাঁরা। সমুদ্রের গ্রাস থেকে নিজেদের বসতবাড়ি, চাষের জমি রক্ষা করতে গড়ে তুললেন মানবপ্রাচীর।

ঘটনটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি গ্রামে। গ্রামবাসীদের বুক পেতে বাঁধ আগলে রাখার ভিডিও ইতিমধ্যেই নেট পাড়ায় ভাইরাল।

বুধবার যশ ও ভরা কোটালের সাঁড়াশি আক্রমণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গ্রামবাসীদের মতে, ঝড়ের থেকেও বেশি ক্ষতি করেছে ভরা কোটালে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস। জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে বিঘার পর বিঘা চাষ জমিতে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়েছে। ফসলের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। ফিশারিতে সমুদ্রের জল ঢুকে মৎস্য চাষিদেরও লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন এখনও পাওয়া হিসেবে অনুযায়ী ১৩৫ টি বাঁধ ভেঙেছে।
বিদ্যাধরী বাঁধ ভেঙে জলপ্লাবিত হয়েছে বহু এলাকা।

উপকূলে বসবাস করার অভিজ্ঞতা থেকে গ্রামবাসীরা জানেন, সুমুদ্রের নোনা জল চাষের জমির কতটা ক্ষতি করতে পারে! কোনও জমিতে একবার নোনা জল ঢুকলে দীর্ঘ সময়ের জন্য সেই জমি চাষের অযোগ্য জমিতে পরিণত হয়।

ইয়াসের সতর্কতা জারির পর থেকেই কোথাও কোথাও প্রশাসনের সাহায্যে কোথাও আবার নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বাঁধ মেরামতি করেছেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ঢেউয়ের দাপটে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে বাঁধ। গ্রামের পর গ্রাম মুহূর্তে জলের তলায়। বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতেই শেষ চেষ্টা হিসেবে ঘন্টার পর ঘন্টার গলা অব্দি জলে দাঁতে দাঁত চিপে বাঁধ আগলে পড়ে রইলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও এক গ্রামের নিরুপায় গ্রামবাসীরা।

ছেলেবেলার স্কুল পাঠ্যে হান্সের বাঁধ বাঁচানোর গল্প সবাই পড়েছি। এবার সেই ছবিই উঠে এলো দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামে।

Comments are closed.