অমিত মালব্যর ট্যুইটে বেআব্রু আয়ুষ্মানের গোঁজামিল! স্বাস্থ্য সাথী নিয়ে তরজা তুঙ্গে

স্বাস্থ্য সাথী নিয়ে তরজা অব্যাহত। এবার আসরে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কুৎসা প্রচারে নেমেছে। পাল্টা হিসেব দিয়ে দাবি তৃণমূলের।

শনিবার সকাল পৌনে বারোটা নাগাদ অমিত মালব্য একটি ট্যুইট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প আসলে একটি বড়ো মাপের ধোঁকা। কেন তিনি একথা বলছেন?

বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিত মালব্য একটি হিসেব দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলছেন, যদি পশ্চিমবঙ্গের মাত্র ৫ শতাংশ জনসংখ্যা বছরে মাত্র ১ লক্ষ টাকার চিকিৎসা বিমা ব্যবহার করেন তাহলে রাজ্য সরকারের খরচ হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা। অথচ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৯২৫ কোটি টাকা! অমিত মালব্য শেষে লিখেছেন, বাজেট বরাদ্দ ছাড়া এই প্রকল্প রাজনৈতিক গিমিক ছাড়া আর কিছুই না।

বিজেপি নেতাকে তাঁর অস্ত্রেই বিঁধেছে তৃণমূল। সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ানের দাবি, ২০১৬ সালে শুরু হওয়া স্বাস্থ্য সাথীর জন্য বছরে বাজেট ছিল ৯২৫ কোটি। ২০২১ সালে পরিবর্ধিত স্বাস্থ্য সাথী স্কিমের জন্য বাজেট ২ হাজার কোটি টাকা। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক বলছেন, প্রথম ভুল হল বাজেটের অর্থ নিয়ে। অমিত মালব্য জানেন না বাজেট বেড়ে হয়েছে ২ হাজার কোটি।

এবার আসুন স্কিমের খুঁটিনাটিতে।

অমিত মালব্য দাবি করেছেন বাংলার মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ বিমার সুবিধা নিতে গেলে তা বরাদ্দ ছাপিয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে কোনও রাজ্যের ৫ শতাংশ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রেকর্ড কি দুনিয়াতে কথাও দেখাতে পারবেন বিজেপি নেতারা? একসঙ্গে এত সংখ্যক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন এটা অবাস্তব, দাবি তৃণমূলের।

রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব এনএস নিগম জানিয়েছিলেন, খুব বেশি হলে রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। এবং হাসপাতালে প্রতি ব্যক্তির খরচের জাতীয় গড় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।

তৃণমূল বলছে, এই হিসেবে রাজ্যের ১ শতাংশ মানুষের বছরে ২০ হাজার টাকা করে হাসপাতালের জন্য খরচ ধরলে তা দাঁড়ায় ২ হাজার কোটি। এটাই স্বাস্থ্য সাথীর বাজেট!   

প্রসঙ্গত আইএসআই এর সাহায্যে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য সাথীর পরিকল্পনা তৈরি করেছে। সেই সময় মাথায় রাখা হয়েছে এই সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়।

অমিত মালব্য যে ট্যুইট করেছেন সেই সূত্র অনুযায়ী কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ব্যয়ের পাল্টা হিসেব দিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, ২০২০ সালের জনসংখ্যা অনুযায়ী ১৩৮ কোটি ভারতবাসীর মধ্যে ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা বা ৫৫ কোটি মানুষ আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা পাবেন। এবার অমিত মালব্যের দেওয়া সূত্র অনুযায়ী ৫৫ কোটির ৫ শতাংশ বা ২ কোটি ৭৫ লক্ষ মানুষকে বছরে ১ লক্ষ টাকার বিমা বেনিফিট দিতে কেন্দ্রের খরচ হওয়ার কথা ২,৭৫,০০০ কোটি টাকা। যা কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারতের মোট বাজেটেরও বহুগুণ বেশি।

তৃণমূলের প্রশ্ন, তাহলে কি মালব্য মোদীর আয়ুষ্মান নিয়েও একই ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করছেন? রাজ্যের শাসক দলের এক শীর্ষ নেতার কটাক্ষ, স্বাস্থ্য সাথীর ভুল ধরতে গিয়ে মোদীর স্বপ্নের প্রকল্পের গোঁজামিল ধরা পড়ে যাচ্ছে, তা কি বুঝতে পারছেন না অমিত মালব্য?

Comments are closed.