বাংলায় দুই অঙ্ক পেরোতেই হিমশিম খাবে বিজেপি! চ্যালেঞ্জ প্রশান্ত কিশোরের

বাংলায় ২০০ আসন নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। শনিবার মেদিনীপুরের সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে এমনই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘোষণা কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বঙ্গ বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। সোমবার সকালে পিকে’র ট্যুইট, আসন্ন বিধানসভা ভোটে বিজেপির পক্ষে দুই অঙ্কের আসন পাওয়াও মুশকিলের হবে। এর চেয়ে ভালো ফল করলে নিজের পেশা ছেড়ে দেবেন বলে চ্যালেঞ্জ করলেন তিনি। ট্যুইটে ঠিক কী লিখেছেন প্রশান্ত কিশোর?
নিজস্ব ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট লিখেছেন, মিডিয়ার একাংশে বাড়তি প্রচার সত্ত্বেও বাস্তবে বঙ্গ বিজেপির দুই অঙ্কের আসন পেতেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এরপরেই পিকে’র চ্যালেঞ্জ, ‘এই ট্যুইট সেভ করে রাখুন। এর চেয়ে বঙ্গ বিজেপি ভালো ফল করলে আমি আমার জায়গা ছেড়ে দেব।’

বাংলা জয়কে পাখির চোখ রেখে প্রতি মাসে নিয়ম করে বাংলায় সভা ও দলীয় বৈঠক করতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। জানুয়ারি থেকে তাঁরা তিন বার করে বাংলায় আসবেন বলে বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর। এর মধ্যে গত শনিবারের অমিতের হাইভোল্টেজ সভায় শুভেন্দু অধিকারী সহ তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেসের একঝাঁক বিধায়ক, সাংসদ ও নেতা গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন। সেই মঞ্চ থেকেই অমিত শাহের হুঁশিয়ারি ছিল বাংলায় ২০০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে বিজেপি। মমতার সরকারকে তুলে ফেলে দেওয়ার ডাক দেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে তৃণমূলও সাংবাদিক বৈঠক করে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে। তাঁদের কটাক্ষ, যাঁরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই চেনেন না তাঁরা বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। তবে এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। তিনি শুধু বিজেপির আসন সংখ্যা দুই অঙ্কেই বেঁধে দিলেন না, তাঁর এই বার্তা ভুল প্রমাণিত হলে নিজের পেশা ছাড়ারও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিলেন তিনি।
২০১৪ সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম কাণ্ডারী বলা হয় প্রশান্ত কিশোরকে। সে সময় খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর কুশলতার তারিফ করেছেন। এরপর বিহারে বিজেপির জোট শরিক জেডেইউ- এর সহ সভাপতি হয়েছেন। নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবেও পেয়েছেন একের পর এক সাফল্য। কিন্তু সিএএ ইস্যুতে নীতীশ কুমার সরকারের সমালোচনা করে দলের বিরাগভাজন হন পিকে। তারপর বিহার ভোটের আগে জেডেইউ দলের রাজনৈতিক পদ থেকে ইস্তফাও দেন তিনি। সেই দলের প্রধান তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজে জানিয়েছিলেন অমিত শাহের কথাতেই প্রশান্ত কিশোরকে নিজের দলে জায়গা দিয়েছিলেন তিনি। সময় গড়িয়েছে, অমিত শাহের একসময়ের ‘প্রিয়পাত্র’ পিকে এখন মমতা ব্যানার্জির দলের ভোট কুশলী। তাঁর ছকে দেওয়া রাস্তাতেই বিধানসভা ভোটের আগে একের পর এক কর্মসূচি গ্রহণ করছে তৃণমূল সরকার। বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে সেই প্রশান্ত কিশোরের মুখ থেকে অমিত শাহদের সরাসরি চ্যালেঞ্জ করাকে তাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Comments are closed.