দিদিকে জেতানোই একমাত্র লক্ষ্য, জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব পেয়ে বলছেন বিজেপি প্রত্যাখ্যাত জিতেন্দ্র

এভাবেও ফিরে আসা যায়!

১৬ এবং ১৭ ডিসেম্বর। গত বছরের এই দুটো দিনকে আসানসোলের জিতেন্দ্র তিওয়ারির জীবনে মোড় ঘোরানো বললে কম বলা হয়। প্রথমে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল সভাপতির পদ ছাড়েন। তারপর দলের প্রাথমিক সদস্যপদ। দিনটা ছিল ১৬ ডিসেম্বর। তারপর রাতারাতি ভোলবদল। ১৭ তারিখ সেই জিতেন্দ্রকেই দেখা যায় অরূপ বিশ্বাসের পাশে হাসি মুখে হাতের মুদ্রায় ভি চিহ্ন দেখাতে। তারপর কার্যত বনবাসে আসানসোল আদালতের উকিলবাবু। শোনা যায়, তাঁকে নিতে আপত্তি করেছে বিজেপি। 

দলের স্থানীয় কার্যকলাপে পান্ডবেশ্বরের বিধায়ককে দেখা গেলেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল তাঁকে নিয়ে নানা খবর। কখনও শোনা যায় বিজেপির তাবড় নেতাদের উপস্থিতিতে পরিবার নিয়ে কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজ সেরেছেন আবার কখনও তিনি দলবল নিয়ে দিল্লি গেছেন বিজেপিতে যোগ দিতে!  কিন্তু তিনি মুখ খোলেননি। ফেসবুকে নাম কা ওয়াস্তে রিজয়েন্ডার কিংবা ইঙ্গিতপূর্ণ দু’একটি পোস্ট দেওয়া ছাড়া জিতেন্দ্র তিওয়ারি কিছুই করেননি। এলাকায় তাঁর নামে পোস্টার পড়েছে কিন্তু টু শব্দটি করেননি জিতেন্দ্র। তাতে জল্পনা আরও বেড়েছে। সেই জিতেন্দ্রকেই জাতীয় মুখপাত্রর দায়িত্ব দিল তৃণমূল। মঙ্গলবার ডেরেক ও’ব্রায়ান ফোন করে তাঁকে এই খবর জানান। আর জিতেন্দ্র জানাচ্ছেন, বিশ্বাস ছিল দিদির উপর।

ভোটের মুখে কার্যত বনবাসে যাওয়া জিতেন্দ্র ফের স্বমহিমায় ফিরলেন কি? বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে সাবলীল জিতেন্দ্র এবার জাতীয় সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরবেন দলের কথা। একথা ঠিক যে জিতেন্দ্র এই কাজ করে যাচ্ছিলেন আগে থেকেই। কিন্তু আনুষ্ঠানিক সিলমোহর জিতেন্দ্রর রাজনৈতিক জীবনে নয়া লাইফলাইন হয়ে উঠতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার। 

জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলছেন, আমার দলের উপর বিশ্বাস ছিল। জানতাম দিদি আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমার সেই বিশ্বাস অটুট। দিদিকে জেতাতে যা করতে হয়, করছি। 

দলের সঙ্গে দূরত্ব নিয়ে কী বলবেন? আসানসোলের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলছেন গত দু’মাস আমাকে নিয়ে অনেক কিছুই রটেছে। কিন্তু আমি মুখ খুলিনি। একজন সাধারণ কর্মী হয়ে কাজ করে গেছি মুখ বুজে। আমি জানতাম দিদি সব বুঝতে পারছেন। তাঁর কথায়, আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। দল যদি দেওয়াল লিখতে বলে, তাই করব। মানুষের কাছে বিজেপির বিপদ বোঝাতে চেষ্টার কসুর করব না। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে হিন্দি, ইংরেজিতে জিতেন্দ্র বোঝাচ্ছেন, মমতার মোকাবিলা ক্রূরতা দিয়ে করার চেষ্টা করছে বিজেপি। যা বাংলা কোনওদিন মেনে নেবে না। তিনি নিশ্চিত, ফিরছেন মমতা ব্যানার্জিই। আর জিতেন্দ্রর অনুগামীরা হেসে বলছেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়! 

তাহলে কি বিজেপি-জিতেন্দ্র অধ্যায়ে আপাতত ইতি? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করাচ্ছেন, রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প! 

Comments are closed.