ভাইরাল ভিডিওয় বামপন্থী পড়ুয়াদের ‘সবক’ শেখানোর নিদান! বিশ্বভারতীর ভিসির বিরুদ্ধে এফআইআর ছাত্রদের

‘একটু ওষুধ দিয়ে দাও না’, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ‘সবক’ শেখানোর জন্য ডানপন্থী সংগঠনকে এমনই পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে! ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল বিশ্বভারতীর ছাত্র সংগঠন। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি thebengalstory.com।
গত ৮ জানুয়ারি নয়া নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। অভিযোগ, এর ঠিক একদিন আগে, ৭ জানুয়ারি দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বামপন্থী পড়ুয়াদের শিক্ষা দিতে হবে। পৌষমেলা শেষ হওয়ার পরেও জোর করে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কিছু দোকান ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর মনোমালিন্য হয়। এসব নিয়ে ৭ তারিখে কর্তৃপক্ষ একটি মশাল মিছিলের আয়োজন করে। সেই মিছিল চলাকালীন রেকর্ড করা একটি ভিডিয়োয় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘একটু ওষুধ দিয়ে দাও না।’ অন্যপ্রান্ত থেকে কণ্ঠস্বর শোনা যায়, কিন্তু আপনার গ্রিন সিগনাল ছাড়া কিছুই করতে পারব না। অভিযোগকারী পড়ুয়াদের দাবি, প্রথম কণ্ঠস্বরটি স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের। তিনিই ডানপন্থী সংগঠনের কাউকে পড়ুয়াদের ‘ওষুধ’ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। যদিও ভিডিয়োটি ভুয়ো বলে অভিযোগ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। তাঁর কথায়, ভিডিয়ো ক্লিপিংয়ে যে গলা শোনা যাচ্ছে তা উপাচার্যের হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর জন্য এই ‘ডেকোরেটেড ভিডিয়ো’ ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও এ নিয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে ভিডিয়োটির সত্যতা thebengalstory.com যাচাই করে দেখেনি।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া দুই ছাত্রকে গত ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেধড়ক পেটানো হয়। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, ধৃতদের মধ্যে অচিন্ত্য বাগদি নামে একজনকে উপাচার্যের সঙ্গে হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে ওই ভিডিয়োয়। এরপর বিশ্বভারতী ছাত্র ঐক্যর পক্ষ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগকারী পড়ুয়ারা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক নন বলে দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভিডিয়ো থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে, গত ১৫ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের দুই সহপাঠীকে মারধরের পিছনে উপাচার্যেরই পরোক্ষ হাত রয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।

Comments are closed.