অভিষেকের নিশানার পর শিশির-দিব্যেন্দু কি তৃণমূলে সক্রিয় হবেন? নাকি পুরো অধিকারী পরিবারই বিজেপিতে!

জল মাপছেন শিশির-দিব্যেন্দু অধিকারী

গঙ্গারামপুরের জনসভা থেকে অভিষেক ব্যানার্জি শুভেন্দুকে নিশানা করতে গিয়ে টেনে এনেছিলেন কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাকি অধিকারীদের। বলেছিলেন, আমরা বুঝতে পারছি ওই বাড়িতে আরও কয়েকজন উপসর্গহীন রোগী আছেন। আমাদের ব্যবস্থা নিতে সুবিধে হবে। তাঁর এই মন্তব্যের পর কি তৃণমূলে সক্রিয় হবেন শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী? এখন এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।

শুভেন্দু অধ্যায়ের শুরু থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল শিশির-দিব্যেন্দু অধিকারীর। আমন্ত্রণ পেয়েও মেদিনীপুর কলেজ মাঠে মমতা ব্যানার্জির সভায় যাননি শিশির। কাঁথিতে তাঁর বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে সভা করে শুভেন্দুর পরিবারের উদ্দেশ্যে তোপ দেগেছেন ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায়। প্রকাশ্যে এখনও কোনও বিবৃতি দেননি পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল সভাপতি তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। ফলে শিশির-দিব্যেন্দু কী করবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা পরিস্থিতি বুঝতে সময় নিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার অভিষেক ব্যানার্জি যেভাবে পুরো অধিকারী পরিবারকে নিশানা করলেন তারপর একটা বিষয় পরিষ্কার, অধিকারীদের ছাড়াই তৃণমূল পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শিশির ও দিব্যেন্দু চাইবেন দল যেন তাঁদের বহিষ্কার করে। তাহলে সাংসদ পদ ছাড়তে হবে না। আবার তৃণমূল এই ফাঁদে পা দিতে নারাজ বলে জানা যাচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে জনসভা ছিল অভিষেক ব্যানার্জির। বিগত কয়েকদিনে নিয়ম করে অভিষেকের নাম না করে তাঁকে তোলাবাজ ভাইপো বলে আক্রমণ করে গেছেন শুভেন্দু অধিকারী। গঙ্গারামপুরের ভরা সভা থেকে তার জবাব দেন অভিষেক। শুধু শুভেন্দুই নয়, অভিষেকের নিশানায় ছিল পুরো অধিকারী পরিবারই। অভিষেক ব্যানার্জি বলেন, করোনায় যেমন উপসর্গহীন রোগী থাকে, তেমনই দলে কিছু উপসর্গহীন আছেন। আমি বলেছিলাম নিজের বাড়িতে পদ্ম ফোটাতে পারে না, সে আবার বাংলায় পদ্ম ফোটাবে! যেই বলেছি সাথে সাথে নিজের ভাইকে (সৌমেন্দু অধিকারী) বিজেপিতে টেনে নিল। তারপরই যুব তৃণমূল সভাপতির খোঁচা, এতে অবশ্য আমাদের সুবিধা হল। বুঝতে পারছি ওই বাড়িতে আরও কয়েকজন উপসর্গহীন রোগী আছেন। আমাদের ব্যবস্থা নিতে সুবিধে হবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অভিষেকের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তৃণমূলে অধিকারী অধ্যায় শেষ। এখন কেবল ব্যবস্থা গ্রহণের অপেক্ষা। কিন্তু তৃণমূল কি সত্যি ব্যবস্থা নেওয়ার পথে যাবে? নাকি অপেক্ষা করবে অধিকারীদের পদক্ষেপের? এই পরিস্থিতিতে কাঁথি, তমলুকের তৃণমূল সাংসদই বা কী করবেন? শুভেন্দু-সৌমেন্দুর পথ ধরে শিশির-দিব্যেন্দুও বিজেপি শিবিরে নাম লেখাবেন কি? সেটাই বড়ো প্রশ্ন।

Comments are closed.