সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরে সাবরীমালায় প্রবেশের জের, নিরাপত্তা চেয়ে শীর্ষ আদালতে বিন্দু, কনক দুর্গা

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন। আর মন্দিরে প্রবেশের জেরে যে হুমকির মুখে তাঁদের পড়তে হচ্ছে তার জন্য নিরাপত্তা চাইতে দেশের শীর্ষ আদালতেই যেতে হল বিন্দু ও কনক দুর্গাকে।
বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিন্দু আম্মিনি ও কনক দুর্গা। ২ রা জানুয়ারি সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের পর থেকে লাগাতার বিজেপি, আরএসএসসহ ডানপন্থী সংগঠনগুলির হুমকির মুখে পড়েছেন দুই মহিলা। বিক্ষোভকারীদের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন কোচির এক জায়গায়। অবশেষে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, শুক্রবার তাঁদের আবেদন শোনা হবে।
দু’সপ্তাহ রাজ্য প্রশাসনের সাহায্যে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর মঙ্গলবার বাড়িতে ফিরেছিলেন কনক দুর্গা। কিন্তু বাড়িতে ফিরেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত হন তিনি। মাথায় আঘাত নিয়ে ভর্তি হন স্থানীয় হাসপাতালে। কনক দুর্গা নিজেই পুলিশকে জানিয়েছেন, মন্দিরে ঢোকার ‘শাস্তিস্বরূপ’ তাঁর গায়ে হাত তুলেছেন শাশুড়ি। সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের আগে এবং পরে একাধিকবার ডানপন্থী সংগঠনের হুমকির মুখে পড়েছেন এই দু’জন। শাশুড়ির হাতে মার খেয়ে পুলিশকে কনক দুর্গা জানান, মঙ্গলবার শ্বশুরবাড়ি ফেরার পরে কেউই তাঁকে দেখে খুশি হননি। উপরন্তু লাঠি দিয়ে শাশুড়ি তাঁকে বেদম মারধর করেন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শ্বশুরবাড়িতে তাঁর আর জায়গা হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন তাঁর পরিবারের লোকজন। শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কনক দুর্গা। এই অবস্থায় কনক দুর্গা ও বিন্দু , দুই মহিলাই নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, দুই মহিলার তরফে আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ সুপ্রিম কোর্টে জানান, বিন্দু ও কনক দুর্গার জীবন সংশয় হয়ে পড়েছে। একজন মহিলা নিজের বাড়িতে ফিরেও লাঞ্ছিত হয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁদের ২৪ ঘন্টা পুলিশি নিরাপত্তা আবশ্যিক হয়ে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, আগামীকালই দুই মহিলার অভিযোগ শোনা হবে। সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপাতত তাঁদের বর্তমান ঠিকানা প্রকাশ করা উচিত নয়।
গত বছরের ২৮ শে সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের পরেও দীর্ঘদিন কোনও ঋতুমতী মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি বিক্ষোভের মুখে পড়ে। ডিসেম্বর মাসে প্রথমবার চেষ্টা করেও মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারেননি বিন্দু আম্মিনি ও কনক দুর্গা। অবশেষে ২ রা জানুয়ারি ভোরে পুলিশি নিরাপত্তায় আয়াপ্পা দেবের দর্শন করেন তাঁরা। কিন্তু এরপর লাগাতার বিক্ষোভকারীদের হুমকি আসতে থাকে। বাড়ি না ফিরে কোচির এক জায়গায় দিন কাটাচ্ছেন বিন্দু ও কনক দুর্গা।

Comments are closed.