আর্থিভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের সংজ্ঞা, ‘বছরে আয় ৮ লক্ষ টাকার কম, ৫ একরের কম জমি, শহরে ১ হাজার বর্গ ফিটের বাড়ি’

আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা উচ্চবর্ণের ছেলে-মেয়েদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবারই সংবিধানের সংশোধনী এই বিল সংসদে পেশ করা হবে। কোন মাপকাঠিতে সংরক্ষণের আওতায় আসবে উচ্চবর্ণীয়রা?
যে সমস্ত উচ্চবর্ণের পরিবারের বাৎসরিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম, ৫ একরের কম কৃষি জমির মালিক, শহরে ১ হাজার বর্গ ফিটের কম মাপের বাড়ি রয়েছে অথবা, মিউনিসিপাল এলাকায় কম বেশি ১০০ বর্গ গজের বাড়ি যাদের রয়েছে সেই পরিবারগুলি সংরক্ষণের আওতায় আসবে।
এক বিজেপি নেতার কথায়, দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্ত উচ্চবর্ণের মানুষ আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের কথা ভেবেই এই বিল আনা হচ্ছে। যদিও এই বিলকে নির্বাচনী চমক বলে ব্যাখ্যা করেছে বিরোধীরা।
বিরোধীদের বক্তব্য, ওবিসি এবং তফসিল জাতি-উপজাতিদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে ৪৯.৫ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ করা যায় না। তাই এই ঘোষণা ভোটের আগে চমক ছাড়া কিছু নয়। যদিও সরকারের বক্তব্য, সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সংরক্ষণ থাকলেও, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণীয়দের জন্য কোনও সংরক্ষণ নেই। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে হারের পর বিজেপি বুঝেছে, দলিত ভোট তাদের থেকে সরে গিয়েছে, পাশাপাশি উচ্চবর্ণের মধ্যেও বিজেপি নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। সেই ক্ষোভ সামাল দিতেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে উচ্চবর্ণকে খুশি করতে চাইছে বিজেপি।
তবে সরকার পক্ষের সাফাই, এতদিন সংরক্ষণ ছিল সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য। অর্থনৈতিকভাবে যাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন তাঁদের জন্য কোনও সংরক্ষণ হয়নি। বিরোধীরা পাল্টা দাবি করেছে, অর্থনৈতিক বৈষম্যই যদি এই বিলের মাপকাঠি হয়, তাহলে শুধুমাত্র উচ্চবর্ণীয়দের জন্য সংরক্ষণ কেন? অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া সব শ্রেণীর মানুষেরই সংরক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।

Comments are closed.