অরণ্যে উচ্ছেদে সাময়িক স্বস্তি, ১৩ ই ফেব্রুয়ারির নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

আপাতত স্বস্তি। গত ১৩ ই ফেব্রুয়ারি পাট্টার আবেদন খারিজ হওয়া আদিবাসী ও অন্যান্য অরণ্যবাসীদের উচ্ছেদের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ২৩ লক্ষ ৩০ হাজার আদিবাসী ও অন্যান্য অরণ্যবাসী যে অস্তিত্বের সংকটে ছিলেন তাতে আপাতত স্বস্তি।
বুধবার কেন্দ্র ও গুজরাত সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল বৃহস্পতিবার এই রায়ের পুনর্বিবেচনা করা হবে। ১৬টি রাজ্যেকে পাট্টার আবেদন খারিজ হওয়া আদিবাসী ও অন্যান্য অরণ্যবাসীদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি নবীন সিনহার ডিভিশন বেঞ্চে শুরু হয় শুনানি। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য সচিবদের কাছ থেকে পাট্টা খারিজ হওয়া আদিবাসী এবং অন্যান্য অরণ্যবাসীদের বিস্তারিত তথ্য নেয় আদালত। এছাড়াও ১৩ ই ফেব্রুয়ারি রায়ের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজ্যের পর্যবেক্ষক কমিটি কী কাজ করেছে তাও জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। আগামী চার মাসের মধ্যে রাজ্যগুলিকে এসম্পর্কে যথাযথ তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ততদিন পর্যন্ত ১৩ ই ফেব্রুয়ারির নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে বিচারপতি অরুন মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালতের রায়ের কিছু জায়গায় পরিবর্তন চেয়ে বুধবার আবেদন করেছিল আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রক। পাশাপাশি ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে পৃথক আবেদন করে কেন্দ্র। ১৩ ফেব্রুয়ারির আগে ২০১৬ সালে এই মামলার শেষ শুনানি হয়। এতদিন কেন্দ্র কী করছিল? সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতাকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি মিশ্র।
২০০৬ সালের অরণ্য আইন অনুযায়ী, ৭৫ বছরের বেশি সময় ধরে যাঁরা বংশপরম্পরায় অরণ্যবাসী বা জীবিকার কারণে জঙ্গলের ওপর নির্ভরশীল, তাঁরা অরণ্য অঞ্চলে স্থায়ী বসবাসের দাবি করতে পারবেন। গত ১৩ ই ফেব্রুয়ারি বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি নবীন সিনহা ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অরণ্যের অধিকার আইন অনুযায়ী, জঙ্গলে বসবাসকারী আদিবাসী ও অন্যান্য বসবাসকারীদের মধ্যে যাদের পাট্টার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে তাদের উচ্ছেদ করতে হবে। এই নির্দেশের ফলে প্রায় ২০ লক্ষ আদিবাসী ও অন্যান্য অরণ্যবাসী অস্তিত্বের সংকটে পড়েন। এই মামলায় কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। এরপরেই কেন্দ্রের তরফে এই রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানানো হয়।

 

Comments are closed.