অমিত শাহ-সহ ৫০৩ জন সাংসদ নিজেদের সম্পত্তির তথ্য দেননি, আরটিআই মামলায় জানাল লোকসভার সচিবালয়

লোকসভার ৫৪৩ জন সাংসদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ ৫০৩ জন তাঁদের সম্পত্তির তথ্য দেননি, এক আরটিআই- এর জবাবে  এই  তথ্য জানাল লোকসভার সচিবালয়।
২০০৪ সালের লোকসভা ডিক্লেয়ারেশন অফ অ্যাসেট আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, শপথ গ্রহণের ৯০ দিনের মধ্যে প্রত্যেক নির্বাচিত সাংসদকে নিজের, স্ত্রীর এবং ছেলে-মেয়েদের নামে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ, দেনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু গত মে মাসে লোকসভা নির্বাচনের পর ৫৪৩ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৪০ জন সাংসদ নিজেদের সম্পত্তির তথ্য জানিয়েছেন। অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামন, সনিয়া গান্ধী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৫০৩ জন সাংসদ এ পর্যন্ত সম্পত্তির কোনও তথ্য দেননি বলে আরটিআইয়ে প্রকাশ।
উত্তরাখণ্ডের উধম সিংহ নগরের কাশীপুরের সমাজকর্মী নাদিমুদ্দিন তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কতজন সাংসদ লোকসভা ভোটের পর তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়েছেন। এর উত্তরে লোকসভার সচিবালয় জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই আরটিআই- এর জবাব দেওয়া হয়েছে। সচিবালয় জানাচ্ছে, মাত্র ৩৬ জন সাংসদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজেদের সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ করেছেন। এই ৩৬ জনের মধ্যে ২৫ জন সাংসদ বিজেপির। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক, বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তাছাড়া তৃণমূলের ৮ জন সাংসদ এবং বিজু জনতা দল, এআইএডিএমকে, শিবসেনার একজন করে সাংসদ সময়মতো নিজেদের সম্পত্তির হিসেব জমা করেছেন।
যে ৫০৩ জন সাংসদ নিজেদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে কোনও তথ্য দেননি, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতা্রামন, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, ওয়েনাডের সাংসদ রাহুল গান্ধী প্রমুখ। প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের একজন সাংসদও নিজেদের সম্পত্তির তথ্য জমা করেননি বলে আরটিআইয়ে প্রকাশ।
লোকসভা সচিবালয় জানাচ্ছে, মোট চারজন সাংসদের এখনও সময় আছে নিজেদের সম্পত্তির তথ্য জমা করার। কারণ, তাঁরা পরে নির্বাচিত হয়েছেন।
তথ্যের অধিকার আন্দোলনের কর্মী নাদিমুদ্দুনের কথায়, আমাদের মন্ত্রী, সাংসদদের বুঝতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত কিংবা স্বচ্ছতার কথা কেবল যেন তাঁদের ভাষণেই না উঠে আসে। তাঁদের কাজকর্মেও যেন তার প্রমাণ উঠে আসে।

Comments are closed.