মহেশতলার ভোটে বিপর্যয় নিয়ে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ীর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক, সমালোচনা।

মহেশতলার উপনির্বাচনে তৃতীয় স্থান পাওয়ার পরই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম সম্পাদক শমীক লাহিড়ীর একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়। বৃহস্পতিবার ভোটের রেজাল্ট বেরনোর পর বিকেলেই শমীক লাহিড়ী তাঁর ফেসবুক পেজে এই হারের কারণ নিয়ে একটি লম্বা পোস্ট করেন। খানিকটা আত্মসমালোচনার সুরে শমীক লাহিড়ী লেখেন বর্তমান রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে। এরপরেই নানা ধরনের মন্তব্য শুরু হয় এই পোস্টের ওপর। এই পোস্টে অনেকেই কমেন্ট করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, দিশাহীন নেতৃত্ব, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এবং দলের কর্মীদেরই বিজেপির দিকে চলে যাওয়ার জন্য আজ সিপিএমের এই বিপর্যয়। যদিও অনেকেই আবার শমীক লাহিড়ীর মন্তব্যের সঙ্গে সহমতও পোষন করেন।

বৃহস্পতির নিজের ফেসবুক পেজে শমীক লিখেছেন, ‘আপাতত রুটি-রুজী, শিক্ষা-চাকরী, জীবন-জীবিকার লড়াই এর মত বিষয়গুলি পিছু হঠেছে বাংলায়। এবং এর জন্য বামপন্থীরা নিজেদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না’। শমীকবাবুর মতে, ‘আমাদের এখানেও জাত-ধর্মের মেরুকরণ প্রবলভাবেই ঘটছে, যা বাংলায় ছিল না। তৃণমূল-বিজেপি এই কাজে আপাতভাবে অনেকটাই সফল’। এরপরই তৃণমূল-বিজেপির সমালোচনা করেছেন শমীক লাহিড়ী। সারদা-নারদা থেকে পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে তৃণমূল-বিজেপি’কে এক আসনে বসিয়ে তাঁর অভিযোগ, হাতে হাত মিলিয়ে রাজ্যে জাত-ধর্মের মেরুকরণের রাজনীতি আমদানি করছে এই দুই দল।

শমীক লাহিড়ীর এই পোস্টের ওপর বহু কমেন্ট করা হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি নানা ইস্যু তুলে সিপিএমের সমালোচনা করেন। জনৈক মুকূট সেন নামে একজন লিখেছেন, নেতৃত্বের ব্যর্থতার জন্য আজ দলের এই অবস্থা। তাঁর অভিযোগ, আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে পার্টি অফিসে বসে রয়েছেন নেতারা।

পুলক লাহিড়ী নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, মহেশতলার ফলাফলে প্রমাণ বামেদের ভোট চলে যাচ্ছে বিজেপি’র দিকে। তাঁর কথায়, দিল্লিতে বিজেপি বিরোধিতা করছে দল অথচ রাজ্যে সিপিএমের ভোট যাচ্ছে বিজেপি’র দিকে। এটা দু’মুখো নীতি।


জনৈক সুব্রত দত্ত লিখেছেন দল এখন দিশাহীন পালতোলা নৌকার মত। প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্বের। কেউ আবার কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোটেরও সমালোচনা করেন। কেউ সরাসরি বাম আমলের পুরনো ইস্যু টেনে আক্রমণ করেছেন সিপিএমকে। পার্থ দে নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ৩৪ বছরে কলকারখানা, ইংরেজি বন্ধ করে রাজ্যকে রসাতলে পাঠিয়ে এখন মরা কান্না কেঁদে কী লাভ?

শমীক লাহিড়ীর এই ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে নানা মন্তব্যকে গঠনমূলক এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া বলেই মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের মতে, রাজ্যে যে পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে তা সাধারণ মানুষ দেখছেন। এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি লড়াই করার বার্তাই দিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক। তাতে যে কেউ নিজের স্বাধীন মত দিতেই পারেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.