ইসলামপুর কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হল সিআইডিকে

উর্দু শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভ এবং বিক্ষোভ চলাকালীন গুলিতে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তভার জেলা পুলিশের হাত থেকে সিআইডির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ওই দিন গ্রামবাসীদের সাথে পুলিশের পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় অবশ্য কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় এখনও কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিন ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়ার ঘোষণা হওয়ার পর, গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করছেন, ওই দিন ঠিক কী ঘটেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, স্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগের দাবির বিরোধিতা করে ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের দাবি তুলে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি ও পথ অবরোধে শামিল হয় দাড়িভিট হাই স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ারা। তাদের মূল দাবি ছিল, স্কুলে উর্দু ভাষার কোনও বিষয় না থাকলেও গত মঙ্গলবার সেখানে উর্দু ভাষার একজন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। ওই শিক্ষককে সরিয়ে অন্যান্য যে বিষয়ে শিক্ষকের সংখ্যা কম সেখানে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানায় পড়ুয়ারা। এরপরই ওই অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠা স্কুল চত্বর। অভিযোগ, আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সরাতে তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ। প্রতিবাদে পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ জানায়, ইটের ঘায়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। অভিযোগ, এরপরই আন্দোলনকে দমন করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ও গুলিও চালানো হয় বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ। গুলিতে ঘটনাস্থলেই রাজেশ সরকার
নামে স্কুলের প্রাক্তন এক পড়ুয়া প্রাণ হারায় বলে জানা গেছে। মৃত রাজেশ সরকার তাদের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি’র সদস্য বলে দাবি করে বিজেপি। পরের দিন হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাপস বর্মণ নামে আরও এক প্রাক্তন স্কুল ছাত্রের। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি চালানোর কথা অস্বীকারে করা হয়েছে।
ইসলামপুরের ঘটনার জন্য ইতিমধ্যেই বিজেপি এবং আরএসএসকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের অভিযোগ, বহিরাহগতদের এনে স্কুলে ঝামেলা করেছে বিজেপি। পুলিশ গুলি চালায়নি বলে দাবি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। সেদিন ইসলামপুরে দুজনের মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার বাংলা বনধও ডাকে বিজেপি।

Comments are closed.