রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গচ্ছিত সম্পদ কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়া হলে তা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিকে ধাক্কা দিতে পারে। একটি বেসরকারি
চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই অভিমত প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজনের।
রাজন জানান, আরবিআই-এর তহবিল থেকে অধিক মাত্রার অর্থ সরকারের হাতে তুলে দিলে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের ‘রেটিং’ কমবে। আরবিআই-এর ‘এএএ’ রেটেং হ্রাস পেলে তা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির পক্ষে বিপজ্জনক হবে। যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তহবিল থেকে সরকারকে অধিক মাত্রায় টাকা দেওয়া হয়, তার ফলাফল কী হতে পারে, এর উত্তরে রাজন অকপটভাবে বলেন, একটি মাত্রা পর্যন্ত ঠিক আছে, তবে তা বেশি হলে দেশের অর্থনীতিতে প্রকোপ ফেলবে। এর ফল হবে সুদূরপ্রসারী বলে অভিমত এই অর্থনীতিবিদের। এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সুস্থ আলোচনা প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজন।
আরবিআই রেগুলেটর্স বোর্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের কিছু বিষয়ে মতান্তর নিয়ে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। রেগুলেটর্স বোর্ডের সদস্য হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকার
সম্প্রতি মনোনীত করে দেশীয় ভাবধারার অর্থনীতিবিদ এস গুরুমূর্তিকে। সেখান থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতভেদের সূত্রপাত।
কেন্দ্রের দাবি, আরবিআই-এর কাছে ৯.৫৯ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক তহবিল রয়েছে, যা মূলত আপৎকালীন সময়ের জন্য রাখা হয়।
কেন্দ্রের বক্তব্য, হিসেব অনুযায়ী যে বিপুল পরিমাণ টাকা আরবিআই জমা রেখেছে, তা সেকেলে এবং রক্ষণাত্মক হিসেব।
বাস্তবে এত টাকা আপৎকালীন সময়ের জন্য জমা রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। তাই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে আরবিআই-এর কাছে চিঠি পাঠিয়ে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা (সারপ্লাস) চাওয়া হয়। যদিও কেন্দ্রের এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেয় আরবিআই।
এরপরে আরবিআই গভর্নর পদ থেকে সরে দাঁড়ান উর্জিত প্যাটেল। যার একটি কারণ হিসেবে অনেকে আরবিআই-এর ওপর কেন্দ্রের এই ‘দখলদারি’কে দায়ী করেছেন। এই প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই উর্জিতের পাশে ছিলেন রঘুরাম রাজন।
Comments are closed.