নীরব মোদীর আর্থিক প্রতারণার বিষয়ে অনেক আগেই রাহুল গান্ধীকে সাবধান করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। কিন্তু তাঁকে নীরব থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল! পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ১৩০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি মামলায় অভিযুক্ত নীরব মোদীকে নিয়ে করা এমনই এক মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দাবি করা হয়েছে, রঘুরাম রাজন নিজেই এমন মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেল, এমন কোনও মন্তব্য করেননি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। পুরোটাই ভুয়ো।
কয়েকদিন আগেই লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে দেখা মিলেছে কোটি কোটি টাকা ঋণ খেলাপির দায়ে অভিযুক্ত হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীর। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফের’ সৌজন্যে সেই ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। নীরব মোদীর এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে করা একটি পোস্টের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন না কি নীরব মোদীর এই জালিয়াতির কথা আগেই আন্দাজ করেছিলেন। তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে তিনি এ নিয়ে সাবধানও করেন। কিন্তু তাঁকে চুপ করে থাকতে বলা হয় এবং ২০১৪ সালে নীরব মোদীকে ফের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে অনুমোদনও দেওয়া হয়।
অর্থাৎ, ২০১৮ সালে ঋণ খেলাপি মামলায় অভিযুক্ত নীরব মোদীর দেশ ছেড়ে পালানো নিয়ে বিরোধীরা যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকেই আঙুল তুলছেন তার বিরোধিতা করেই এই পোস্ট। আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নরের ভুয়ো প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের অর্থ জালিয়াতি নিয়ে পূর্বতন কংগ্রেস সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি।
ভাইরাল হওয়া এই পোস্টটির সত্যতা পরীক্ষা করে দেখে সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদ মাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’। তাদের অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লিউএ) জানিয়েছে, এই দাবি একেবারেই ভুয়ো। এমন কোনও মন্তব্য কখনোই করেননি প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর। ১১ই মার্চ ‘ইন্ডিয়া টুডে’র একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ, ‘রাজন+রাহুল গান্ধী+নীরব মোদী’ এই ‘কি ওয়ার্ডস’ দিয়ে রিভার্স সার্চ করে কোনও ফলাফল পাওয়া যায়নি। বরং ‘নিউজ ১৮’ সংবাদ মাধ্যমের একটি ‘সার্চ রেজাল্ট’ পাওয়া গিয়েছে। যেখানে ২০১৮ সালের ১৩ ই মার্চ এক সাক্ষাৎকারে অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ফেক পোস্ট’-এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। ভাইরাল হওয়া সংশ্লিষ্ট পোস্টটিতে ‘গভর্নর’ শব্দটির বানানও ভুল। এই একই পোস্ট গত বছর নীরব মোদী দেশ ছেড়ে পালানোর পরেও ভাইরাল হয়েছিল।
Comments are closed.