রবিবার হিংসার দায় অর্জুন ও পবন সিংহের, দাবি এডিজি আইন শৃঙ্খলার, ভূয়সী প্রশংসা মনোজ ভার্মার, থমথমে বনধের বারাকপুর

রবিবার ভাটপাড়া-শ্যামনগর-জগদ্দলে হিংসার দায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহেরই। পুলিশের লাঠির আঘাতে নয়, অর্জুন সিংহের মাথা ফেটেছে তাঁর সমর্থকদেরই ছোঁড়া ইটের ঘায়ে, দাবি করলেন এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংহ। বললেন, রবিবার জগদ্দলে হিংসা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অর্জুন সিংহের ছেলে তথা বিজেপি বিধায়ক পবন সিংহ। দোষীদের শনাক্তকরণ করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে জ্ঞানবন্ত সিংহ বলেন, রবিবার শ্যামনগরের পার্টি অফিস দখল কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলেও বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। এমনকী মজদুর ভবনের ওপর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয় বলেও দাবি করেন এডিজি আইন শৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংহ।
রবিবার বারাকপুরের জগদ্দলে বিজেপির অবরোধ তুলতে গিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ অভিযোগ করেন, খোদ বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটে তাঁর। এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে জ্ঞানবন্ত সিংহ বলেন, পুলিশ কখনও মাথা লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ করে না। পাশাপাশি, রবিবারের ঘটনার জন্য অর্জুন ও তাঁর পুত্র পবন সিংহের ভূমিকা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রবিবার যেভাবে বারাকপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ, তার জন্য বারাকপুরের সিপি মনোজ ভার্মার ভূয়সী প্রশংশা করেন জ্ঞানবন্ত। বলেন, পুলিশি হস্তক্ষেপে প্রথমে অবরোধ উঠে গেলেও, ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিংহের নেতৃত্বে সার্কাস মোড়ে ফের বিক্ষোভ আন্দোলন সংগঠিত হয়। কিন্তু এরপর বোমাবাজি ও ইট বৃষ্টি শুরু হলে বাধ্য হয়ে শূন্যে গুলি ছোঁড়েন সিপি মনোজ ভার্মা, বলে মন্তব্য করেন জ্ঞানবন্ত সিংহ। তিনি বলেন, রবিবারের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের অনেককেই ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা হয়েছে।
রবিবারের গণ্ডগোলের ঘটনায় অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে জগদ্দল থানায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে রবিবারের ঘটনার পর সোমবার বারাকপুরে বনধ ডেকেছিল বিজেপি। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল-বিজেপি গোলমাল লেগে যায়। চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ, বোমাবাজি এবং অবরোধ। এর মাঝে পড়ে নাকাল হন সাধারণ মানুষ। অবরোধের জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। প্রভাব পড়ে ট্রেন চলাচলেও। বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে জোর করে দোকান বাজার বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে সোমবার কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে অর্জুন সিংহের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। হিংসার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি।

Comments are closed.