৫৫০ কোটি টাকা মেটানোর সময়সীমা শেষ, সুপ্রিম কোর্টে অনিল আম্বানীর গ্রেফতারির দাবি করল এরিকসন

শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ সময়সীমা। কিন্তু তা সত্ত্বেও সুইডিশ বহুজাতিক টেলিকম সংস্থা এরিকসনের বকেয়া প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা মেটাতে পারেনি রিলায়েন্স গোষ্ঠীর অনিল আম্বানীর টেলিকম সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন (আর কম)। নিজেদের বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল সুইডিশ সংস্থা এরিকসন। শুক্রবার, সুপ্রিম কোর্টে এরিকসনের তরফে আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের বকেয়া ৫৫০ কোটি টাকা মেটাতে পারেনি আর কম। যা আদলতের নির্দেশ অমান্য করার সমান। এরিকসনের দাবি, বকেয়া না মেটানোয় তাই আর কম কর্ণধার অনিল আম্বানীকে গ্রেফতারির নির্দেশ দিক কোর্ট।
পাশাপাশি, কোনওভাবেই যাতে অনিল দেশের বাইরে যেতে না পারেন সেই নির্দেশও দেওয়া হোক। এরিকসনের আইনজীবীদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে নয়া এই আবেদনে নির্দিষ্ট আইনি ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোর্টের নির্দেশ অমান্য করলে ছয় মাস পর্যন্ত কারাবাসের কথা আইনে বলা আছে। তাই দ্রুত গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হোক অনিল আম্বানীকে। জানা গেছে, আর কমের তরফে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা আবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের টালবাহানা, ও স্পেকট্রাম বিক্রিতে ছাড়পত্র না মেলাতেই তারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এরিকসনের বকেয়া টাকা মেটাতে পারছে না। কিন্তু, তারা টাকা যত দ্রুত সম্ভব মেটাতে ইচ্ছুক, প্রয়োজনে পার্সোনাল গ্যারেন্টি দিতে রাজি আছেন অনিল আম্বানী।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে এরিকসনের সঙ্গে চুক্তি হয় আর কমের। তাতে বলা হয়, ভারতে আর কমের টেলিকম ব্যবসা সামলাবে এরকসন। কিন্তু, পরে আর কমের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ আনে এরিকসন। দ্বারস্থ হয় ন্যাশনাল কোম্পানি ল্য ট্রাইবুনালের। আর কমের কাছে বকেয়া প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা দাবি করে এরিকসন। পরে ৫৫০ কোটি টাকা মেটানোর রফা সূত্রে আসে দুই সংস্থা। গত ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেই টাকা মেটানোর কথা ছিল আরকমের। কিন্তু তা না হওয়ায়, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় সুইডিশ বহুজাতিক সংস্থাটি। গত ২৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এরিকসনের বকেয়া টাকা মেটাতে হবে আর কমকে। আর অতিরিক্ত কোনও সময়সীমা দেওয়া হবে না। পাশাপাশি ৩০ সেপ্টেম্বরের ডেটলাইন অমান্য করায় অতিরিক্ত সুদও গুনতে হবে আর কমকে, তাও বলে কোর্ট। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত সময়সীমাও ইতিমধ্যে পেরিয়ে গিয়েছে। তাই ফের পাওনা টাকা পেতে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হল এরিকসনকে।

Comments are closed.