অপর্ণা সেন: আমাকে জোর করে ‘আল্লা হু আকবর’ বলতে বললে ভালো লাগবে না, এর জন্য যেন দেশদ্রোহী চিহ্নিত করা না হয়

 

বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৪৯ জন বিখ্যাত ব্যক্তি মঙ্গলবার খোলা চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন সংখ্যালঘু ও দলিতদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে, মুক্তচিন্তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এইসব ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া ও দ্রুত আইন-শৃঙ্খলার উন্নতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান বিদ্বজ্জনেরা।
বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠক থেকেও এবিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন চিত্র পরিচালক ও অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। তিনি বলেন, তাঁকে কেউ জোর করে ‘আল্লা হু আকবর’ বলতে বললে, তিনি তা বলবেন না। মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, কেন জোর করে কাউকে স্লোগান দিতে বাধ্য করা হবে, প্রশ্ন তোলেন অপর্ণা সেন। তাঁর কথায়, ‘জয় শ্রীরাম না বললে কেন পিটিয়ে মারা হবে?’
দেশে প্রায় প্রতিদিন যেভাবে গণপিটুনিতে মৃত্যু, গো-মাংস বা গরু চোর সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অপর্ণা সেন বলেন, যা হচ্ছে একেবারেই ঠিক হচ্ছে না। যে সব ঘটনা দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে আঘাত হানছে, তা দ্রুত বন্ধ হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য তাঁর। প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের সই সম্বলিত চিঠি পাঠানো নিয়ে অপর্ণা সেন বলেন, কোনও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই চিঠিকে যেন বিচার করা না হয়। প্রতিবাদের অধিকার সবার রয়েছে। বর্তমান সামাজিক সমস্যা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন বলেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অপর্ণা সেন। প্রতিদিন যেভাবে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে তাকে দেশের কোনও সুস্থ ও শান্তিকামী মানুষ সমর্থন করতে পারেন না। পাশাপাশি, গো-মাংস বহন বা গরু পাচারের ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মারা বা শারীরিক হেনস্থার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন অপর্ণা সেন। তিনি বলেন, গণপিটুনিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা উচিত।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বিশিষ্টজনদের খোলা চিঠিতে সই ছিল অপর্ণা সেন ও তাঁর কন্যা কঙ্কনা সেনশর্মার। সেই চিঠিতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের দাবি, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ও দলিতদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করুক সরকার। জানিয়েছিলেন, শাসক দলের বিরোধিতা করা মানেই দেশদ্রোহিতা নয়।

Comments are closed.