শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড গতিতে পরপর ট্রাফিক আইন ভেঙেছেন আরসালানের মালিকের ছেলে, ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত

শেকসপিয়ার সরণিতে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় দুই বাংলাদেশি পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় রেস্তরাঁ আরসালানের মালিকের ছেলে আরসালান পারভেজকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার মধ্যরাতে আরসালান পারভেজ নিজেই প্রচণ্ড গতিতে জাগুয়ার গাড়ি চালিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই দুর্ঘটনার তদন্ত প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত, এটি আচমকা ঘটে যাওয়া কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং দুর্ঘটনার আগে থেকেই নিয়ম ভেঙে বেপরোয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন আরসালান পারভেজ। দুর্ঘটনার কিছু আগেই ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙেছিলেন ঘাতক জাগুয়ারের চালক।
ধৃত আরসালান কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের জানিয়েছেন, রাতে তিনি রাসেল স্ট্রিট ধরে যাচ্ছিলেন। ওই রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। দেখা যায়, রাসেল স্ট্রিট থেকে জাগুয়ারটি মিডলটন স্ট্রিট ধরে। সেই রাস্তা ধরে জওহরলাল নেহরু রোডের সংযোগস্থলে বাঁ দিকে যাওয়ার সময় সিগন্যাল লাল ছিল। সেই সিগন্যাল ভেঙেই জাগুয়ারটি চলে যায় বিড়লা তারামণ্ডলের দিকে। সেখান থেকে বাঁ দিকে মোড় নিয়ে চলে যায় শেক্সপিয়র সরণিতে।
আরসালান কলকাতার বিখ্যাত রেস্তরাঁ চেন আরসালানের মালিকের ছেলে। তাঁর পরিবারের দাবি, রাত ১২টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে বেরোন আরসালান। রাত ১২টা থেকে পৌনে ২টো পর্যন্ত কোথায় তিনি ছিলেন, সেই তথ্য আরসালানের বক্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
শুক্রবার মাঝরাতে কলামন্দিরের কাছে আরসালানের জাগুয়ার প্রচণ্ড গতিতে প্রথমে ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজকে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মার্সিডিজটি ধাক্কা মারে পুলিশ কিয়স্কের ছাইনিতে দাঁড়িয়ে থাকা তিন জনকে। দু’জনের মৃত্যু হয়। দু’জনেই বাংলাদেশি নাগরিক। সামান্য আহত হন তাঁদের আরও এক সঙ্গী। দুর্ঘটনার পরই গাড়ি ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন আরসালান। শনিবার দুপুরে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরসালানকে রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে পুলিশ। শনিবার পুলিশ আরসালানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯ (বেপরোয়া গাড়ি চালানো), ৪২৭ (অন্যের সম্পত্তি নষ্ট), ৩০৪/২ (অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা) দায়ের করা হয়েছিল। রবিবার দুটি জামিন অযোগ্য ধারাও যুক্ত করা হয়। সেগুলি হল ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা) এবং পিডিপিপি আইনের ৩ নম্বর ধারা (সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস)।

Comments are closed.