Assam CAA: ফেক নিউজ রুখতে এবার জুবিন গর্গ সহ অসমীয়া শিল্পীরা তৈরি করলেন ওয়েবসাইট

নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সবচেয়ে প্রথম আগুন জ্বলেছিল অসমে। এনআরসি পরবর্তী অসম দেখেছে এক অভূতপূর্ব বিক্ষোভ আন্দোলন। অসমের পড়ুয়া সমাজ থেকে শুরু করে দেশ কাঁপানো অভিনেতা, গায়ক, নায়করা সমস্ত বাধা দূরে সরিয়ে পথে নেমেছিলেন। সঙ্গে পেয়েছিলেন হাজার হাজার সাধারণ অসমবাসীকে। অন্যদিকে কয়েকটি জায়গায় আন্দোলন হিংসাত্মক চেহারা নেওয়ায় নামাতে হয় সেনা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় একাধিক আন্দোলনকারীর। সিএএ বিরোধিতায় ধিকি ধিকি জ্বলা আগুন আচমকাই দাবানলের রূপ নেয়। প্রমাদ গোনে কেন্দ্র। পরপর দু’বার বাতিল করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত অসম সফর।

তারপর ব্রহ্মপুত্র দিয়ে জল গড়িয়েছে। প্রাথমিক উত্তেজনার রেশ স্তিমিত হয়ে আরও জমাট বেধেছে অসমে সিএএ বিরোধী আন্দোলন। এবার সেই আন্দোলন পৌঁছল পরের স্তরে। বিজেপির আইটি সেলের মোকাবিলায় এবং অসম নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানো রুখতে আন্দোলনের সামনের সারির মুখ জুবিন গর্গ, বর্ষা রানি বিষয়া, রবি শর্মা, মানস রবিন, গড়িমা সইকিয়ার মতো শিল্পীরা তৈরি করে ফেললেন একটি পুরোদস্তুর ওয়েবসাইট।

আরও জানতে ক্লিক করুন, নাম-ঠিকানায় সামান্য গরমিলে বহু নাম বাদ অসমে

https://assamagainstcaa.in/ নামের এই ওয়েবসাইটে আন্দোলনের খবরাখবরের পাশাপাশি থাকছে অসমের নাতিদীর্ঘ ইতিহাস এবং সিএএ নিয়ে মূল আপত্তির বিষয়। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই আগামী কর্মসূচি সম্বন্ধে ইচ্ছুকদের ওয়াকিবহাল করা হবে।

অসমে আন্দোলন যত দানা বাঁধছে, ততই বিজেপির আইটি সেলের তরফে ফেক নিউজ ছড়ানোর পরিমাণ বাড়ছে, অভিযোগ উদ্যোক্তাদের। এমনকী সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়া সাধারণ মানুষকেও বেছে বেছে বিভিন্ন উসকানিমূলক হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ড পাঠানো হচ্ছে। ফেসবুক, ট্যুইটারেও বেছে বেছে চলছে ট্রোলিং। এরই মোকাবিলা করতে অসম অ্যাগেনস্ট সিএএ বা সিএএর বিরুদ্ধে অসম নাম নিয়ে হাজির হল নয়া ওয়েবসাইট।

সম্প্রতি গুয়াহাটিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন অসম আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ জুবিন গর্গ, বর্ষা রানিরা। সেখানে জুবিন গর্গ জানান, কংগ্রেস বা বিজেপি, যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, আমরা সিএএর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবই। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিলেই তাঁকে দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দিয়ে সরকার বিরাট বড় ভুল করছে।

ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অ-মুসলিমদের ছেড়ে দিতে বলল কেন্দ্র, আরও জানতে ক্লিক করুন

সিএএর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। কিন্তু কেন্দ্র কিংবা অসম সরকার কেউই একবার ভাবার প্রয়োজন মনে করছে না, কেন এত আন্দোলন? আমরা কেন বিরোধিতা করছি সেই কারণটা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে না। একটা বিষয় পরিষ্কার, অসম আর একজনও বিদেশির বোঝা বইতে সক্ষম নয়। কিন্তু নতুন আইনের মধ্যে দিয়ে সেটাই করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবেই। কোনওভাবেই মুখ বন্ধ করে রাখা যাবে না। এমনই মন্তব্য করেন বর্ষা রানি বিষয়া।

আরও জানতে ক্লিক করুন, ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করছেন যাঁরা, এনআরসিতে নাম বাদ সেই শ্রমিকদেরও

কিন্তু পৃথক ওয়েবসাইটের কী প্রয়োজন? এ প্রসঙ্গে জুবিন গর্গদের অভিমত খুব স্পষ্ট। তাঁরা বলছেন, যেভাবে ফেক নিউজ ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে আরও ঘোরাল করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে, ডিজিটাল মাধ্যমেই তার প্রতিবাদ জরুরি। এ কথা মাথায় রেখেই একটি ওয়েবসাইট তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। বলেন জুবিন গর্গ। বিভিন্ন আইটি সেল এটা বুঝুক, যে আমাদেরও আইটি সেল আছে এবং যা তাদের ছড়ানো ফেক নিউজ মোকাবিলায় যথেষ্ট। মন্তব্য জুবিন পত্নী তথা শিল্পী গড়িমা সইকিয়া গর্গর।

আর জুবিন গর্গের প্রশ্ন কেউ যদি কোনও অবিচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে, তাঁকে কীভাবে দেশদ্রোহী বলা যায়!

Comments are closed.