উত্তর-পূর্বের ৫ রাজ্যে পরোয়ানা ছাড়াই যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে অসম রাইফেলস, বিশেষ ক্ষমতা প্রদান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের, উত্তর-পূর্বে ক্ষোভ

কোনও পরোয়ানা ছাড়াই উত্তর-পূর্বের পাঁচ রাজ্যে কোনও সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা পেল অসম রাইফেলস। শুক্রবার এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম-এই পাঁচ রাজ্যে কোনও পরোয়ানা ছাড়া যে কোনও জায়গায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবে অসম রাইফেলস। ভারতীয় ফৌজদারি আইনের ৪১, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫১, ৫৩, ৫৪, ১৪৯, ১৫০ এবং ১৫০ ধারায় এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে অসম রাইফেলস।
ফৌজদারি আইনের ৪১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হয় পুলিশ আধিকারিককে। আর ফৌজদারি আইনের ৪৭ ধারা অনুযায়ী যেকোনও জায়গায় তল্লাশি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।
১৯৫৮ সালে আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট বা আফস্পা জারি করা হয়েছিল উত্তর-পূর্বের ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ অঞ্চলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। বিভিন্ন সময়ে এই আইনের সুবিধা নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে সেনা ও আধাসেনার বিরুদ্ধে। ২০০৪ সালে মণিপুরে অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে মনোরমাকে অত্যাচার ও ধর্ষণের পর গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। এরপর গর্জে উঠেছিল মণিপুর, দেশবাসী দেখেছিল প্রতিবাদের এক অভূতপূর্ব চেহারা। চাপে পড়ে ইম্ফল থেকে আধা সামরিক বাহিনীকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সেনা ও আধা সেনার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে গর্জে উঠেছে উত্তর-পূর্ব। ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে অরুণাচল প্রদেশের ১৬টি থানার মধ্যে ৮ টি থেকে অসম রাইফেলসকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি মেঘালয় থেকে এই আধা সামরিক বাহিনীকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
কিন্তু লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় উত্তর-পূর্বের পাঁচ রাজ্যে ঘুরপথে ফের আসাম রাইফেলসের ক্ষমতাবৃদ্ধি করায় প্রশ্ন উঠছে। এমনিতে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আঁচ পেয়েছে দিল্লিও। সে কারণেই কি এভাবে অসম রাইফেলসের ক্ষমতা বৃদ্ধি করল কেন্দ্র? প্রশ্ন উঠছে।

Comments are closed.