শেখ হাসিনা: নয়া নাগরিকত্ব আইনের কোনও প্রয়োজন ছিল না

ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইনকে ‘অহেতুক’ বলে বর্ণনা করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কিংবা নাগরিকপঞ্জি একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বরাবর জানিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। সম্পতি একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই একই বক্তব্য তুলে ধরলেও ব্যক্তিগতভাবে ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইনকে অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান এই তিন প্রতিবেশী দেশে ধর্মীয় নিপীড়িত অ-মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষদের এ দেশে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সংশোধিত আইন এনেছে মোদী সরকার। তা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে বিরোধীদের আন্দোলন ও প্রতিবাদ। এই প্রেক্ষিতে আবু ধাবি সফরে গিয়ে গালফ নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইন বাংলাদেশকে কোনওভাবে প্রভাবিত করবে কি না, সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে হাসিনা জানান, তাঁর দেশের মানুষ এই আইনের ফলে কোনও অসুবিধায় পড়বে না। সংশ্লিষ্ট আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে এ নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মনোভাব প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি বুঝতে পারছি না, কেন ভারত সরকার এমন একটি আইন এনেছে। এটার কোনও প্রয়োজনই নেই। গত ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়া, ভারত জুড়ে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এই প্রথমবার সংশ্লিষ্ট আইন নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, সিএএ হোক কিংবা এনআরসি, বাংলাদেশ বরাবরই মনে করে এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারও বারবার বলে এসেছে, এনআরসি কেবল তাদের দেশের জন্য। গত অক্টোবর মাসে ভারত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আমাকে সে কথাই জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে কাউকে বাংলাদেশ ছাড়তে হয় না বলেও দাবি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতেও একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে।
প্রসঙ্গত, দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর ভারত সফর বাতিল করেছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান। বাতিল হয়েছে দু’ দেশের মধ্যে একাধিক বৈঠক। যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কেন্দ্রীয় আইনকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন।

Comments are closed.