কৃষি বিল নিয়ে পাল্টা পথে নামছে বঙ্গ বিজেপি, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে অমিত শাহকে চিঠি দিলীপের

কৃষি বিল নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আন্দোলন। কৃষক স্বার্থে এই জোড়া বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই কৃষি বিলকেই ২০২১ বিধানসভা ভোট প্রচারের অন্যতম অস্ত্র হিসেবে দেখছে বঙ্গ বিজেপি। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি সূত্রে খবর, কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের তিনটি বিল নিয়ে তৃণমূল যে ‘অপপ্রচার’চালাচ্ছে, আগামী মাস থেকেই তার পাল্টা প্রচারে নামছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তা জানিয়ে অমিত শাহকে চিঠি দিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি। তবে চিঠিতে তার আগে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার বিষয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দিলীপ জানিয়েছেন, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। সূত্রের খবর, এই চিঠিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়নি বটে, তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন ‘অসম্ভব’ বলে দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। এর জন্য কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, এই বিষয় নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন কমিশনেরও দ্বারস্থ হচ্ছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
এদিকে আগামী ছয় মাস রাজ্যে দলের প্রচারের রণকৌশল কী হবে, তা ঠিক করতে শীঘ্রই দিল্লিতে বৈঠকে বসেছেন বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। স্থির হয়েছে, দুর্গা পুজোর সময় থেকে ব্যাপক প্রচারে নামবে দল। প্রচারের অন্যতম বিষয়বস্তু হিসেবে যেমন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর জোর দেওয়া হবে, তেমনই থাকছে কৃষি ক্ষেত্রে মোদী সরকারের সংস্কারমুখী বিলের ইতিবাচক দিকগুলি নিয়েও জনসংযোগ চালানো। দিলীপ ঘোষের মতে, তৃণমূল এই বিলগুলি নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছ। জবাবে পাল্টা প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিরোধীদের আন্দোলনের মধ্যেও কৃষি বিলের উপযোগিতা নিয়ে রোজই ট্যুইট করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু পঞ্জাব, হরিয়ানার মতো রাজ্যে কৃষকদের আন্দোলনের ঝাঁঝ প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপির শরিক অকালি দলের মন্ত্রী। সরব বিরোধীরা সংসদের বাদল অধিবেশন বয়কট করেছেন। স্বাভাবিক ভাবে এ রাজ্যেও প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি নতুন কৃষি আইনে কোনও ফায়দা হবে? ইতিমধ্যেই বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। তাই আটঘাট বেঁধে নামছে বিজেপিও। আগামী ছয় মাসের প্রচারের রণকৌশল চূড়ান্ত করতে বাংলার সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, চলতি অধিবেশন শেষে বিজেপি সাংসদরা রাজ্যে ফিরেই মোদী সরকারের নতুন কৃষি আইনের ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে প্রচারে ঝাঁপাবেন। সেই ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করছেন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা।

Comments are closed.