কৃষি বিলের বিরোধিতায় শুক্রবার পথে নামছে বামপন্থী সংগঠনগুলি, রাজ্য সহ দেশজুড়ে কর্মসূচি, কলকাতায় মিছিল

কৃষি বিলকে সামনে রেখে সারা দেশের কৃষকদের একজোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বামেরা। ২৫ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলি। প্রায় ২১ টি কৃষক সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে তৈরি হয়েছে ‘সারা ভারত কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’ বা ‘এআইকেএসসিসি’-র মতো যৌথ মঞ্চ। এই মঞ্চের তরফে কখনও কেন্দ্রীয় ভাবে দেশজুড়ে কর্মসূচি, কখনও বা রাজ্যভিত্তিক কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
শুক্রবার থেকে পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশে হরতাল ও দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তারই অঙ্গ হিসেবে এই রাজ্যের প্রতি জেলায় জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে সংগঠনের রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে। কৃষক সংগঠনগুলির পাশাপাশি বামেদের গণসংঠনগুলিও এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে।
সর্ব ভারতীয় কিষাণ সভার সভাপতি অশোক ধাওয়ালে, সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাদের কথায়, চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখটি ভারতীয় সংসদের কালো দিন। অতিমারি করোনার হানায় ত্রস্ত মানুষজন। এই অবস্থাতেও কৃষকরা ফসল ফলিয়েছেন। না হলে জিডিপি আরও নীচে যেত। কিন্তু তার প্রতিদানে কৃষকদের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা আনা হল বলে অভিযোগ কৃষক নেতাদের। কর্পোরেটের নির্দেশ পালন করতে গিয়েই কি তাড়াহুড়ো করে এই বিল পাশ করাল কেন্দ্র? কটাক্ষ হান্নান মোল্লাদের।
সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার বলেন, দানবীয় কৃষি আইনগুলির বিরুদ্ধে ২৫ সেপ্টেম্বরের আন্দোলন শেষ নয়, শুরু মাত্র। তাঁর অভিযোগ, নয়া আইন কৃষকের দর কষাকষির অধিকারকে কেড়ে নেবে। বহুজাতিকদের দাপটে বন্ধ হয়ে যাবে রাইস মিলগুলো। তাছাড়া অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধনের ফলে ইচ্ছেমতো ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ মজুত করতে পারবেন বড়ো ব্যবসায়ীরা। চলতি বাজারে ফড়ে আড়ৎদাররা যে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে তাকেই আসলে সরকারি বৈধতা দিল কেন্দ্র। তাঁদের আরও অভিযোগ, চাল, আলু, ডাল, ভোজ্য তেল মজুত করে রেখে কৃষকদের যেমন ফসলের দাম থেকে বঞ্চিত করে ইচ্ছেমতো দামে ফসল কিনবে কর্পোরেটরা, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে যাবে দাম।
কৃষিকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার এই নীতির প্রতিবাদে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি ভারত বন্‌ধ এবং দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-সহ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি ওই প্রতিবাদকে সমর্থন করছে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বামফ্রন্ট এবং সহযোগী ১৬টি দল বৈঠক করে ঠিক করেছে, তারাও কৃষক বিক্ষোভের সঙ্গে থাকবে। বিভিন্ন অংশের মানুষ ও সংগঠনকে নিয়ে ২৫ তারিখ ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত যে মিছিলের ডাক দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি, তার সঙ্গে বাম নেতৃত্ব পা মেলাবেন বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।

Comments are closed.