দেশের প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস বিলগ্নীকরণের পথে কেন্দ্র, লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও কেন এই সিদ্ধান্ত, প্রশ্ন

আরও এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের। এবার আচার্য প্রফুল্লচন্দ রায় প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা, বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসের বিলগ্নীকরণের উদ্যোগ নিল বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস সহ দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ সংস্থা বিলগ্নীকরণের জন্য কমিটি গঠন করা হবে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, বেঙ্গল কেমিক্যালস ও হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিকসের স্ট্র্যাটেজিক সেল হবে। এছাড়া ইন্ডিয়ান ড্রাগস ও রাজস্থান ড্রাগস নামে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ সংস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকাশ জাভড়েকর। এই সংস্থাগুলির অতিরিক্ত জমি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বছর চারেক আগে বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসের বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এবার তা কার্যকর করার জন্য কমিটি গঠন হচ্ছে। পাশাপাশি, আরও বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
গত আর্থিক বছরে প্রায় ২৫ কোটি মুনাফা করেছিল বেঙ্গল কেমিক্যালস। যা সংস্থার সর্বকালীন রেকর্ড। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন বিলগ্নীকরণের পথে হাঁটছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সংস্থার কর্মীরা।
২০১৬ সালে বেঙ্গল কেমিক্যালসের বিলগ্নীকরণ এবং অতিরিক্ত জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সময় সিটু সমর্থিত বেঙ্গল কেমিক্যালসের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টে। সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় যায় শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে। এরপর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে কেন্দ্র। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তবে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, আগামী সপ্তাহে কলকাতা হাইকর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯০১ সালে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেমিক্যালসের। এটিই দেশের প্রথম ওষুধ সংস্থা। লোকসানের কারণে ১৯৭৭ সালে এই সংস্থাটি জাতীয়তাকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। তবে ১৯৯২ সালে কেন্দ্রীয় সংস্থা বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশনের (বিআইএফআর) চলে যায় সংস্থাটি। গত কয়েক বছরে যখন সংস্থাটি ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে, ঠিক সেই সময় কেন্দ্রের এই বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংস্থার কর্মীরা।

Comments are closed.