খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান আর বাংলাদেশের নাগরিক নন, দাবি বাংলাদেশ সরকারের। বিএনপির নেতৃত্বে কে, প্রশ্ন।

সাধারণ নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত বেহাল অবস্থা বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির। একদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্ণীতি সংক্রান্ত মামলায় বিএনপি নেত্রী কয়েক মাস ধরে জেলে বন্দি। এরই মধ্যে জিয়ার ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিতর্কে। তিনি এখন আদৌ বাংলাদেশের নাগরিক কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশজুড়ে। তারেক রহমান সম্প্রতি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সপরিবারে তাঁর পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এই বিতর্কে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। এ’বছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম বলেই মনে করছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল। এই অবস্থায় তাঁর ছেলে তারেক রহমানও দেশে ফিরতে না পারলে, আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি কার নেতৃত্বে লড়াই করবে সেই প্রশ্নও উঠছে দেশে।
২০০৮ সালের জুলাই মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে দুর্ণীতির অভিযোগে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে শেখ হাসিনা সরকার। পরের বছর এই মামলায় চার্জশিট পেশ করা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর এ’বছরের গোড়ায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় খালেদা জিয়া, তারিক রহমানসহ বাকিদের। খালেদার পাঁচ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়। তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই থেকেই খালেদা জিয়া ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। তাঁর সঙ্গে দলের কাউকে দেখা করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না বলে লাগাতার অভিযোগ জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মুখপাত্র রুহুল কবীর রিজভি। তাঁর অভিযোগ, ‘খালেদা জিয়ার শরীর অত্যন্ত খারাপ। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দরকার। কিন্তু সরকার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছে না।’ যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, খালেদা জিয়া ভাল আছেন।
জেলে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরের মধ্যেই, কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগ সরকার জানায়, লন্ডনে বসবাসকারী তারেক রহমান সেখানে বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে সপরিবারে পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব রাখতে চান না বলেও শেখ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়র আলমের দাবি। যদিও এই দাবি মানতে চাননি বিএনপি নেতৃত্বের একটা অংশ। তাঁর দাবির পক্ষে শাহরিয়র আলম সোমবার তথ্যও পেশ করেছেন সাংবাদিক বৈঠকে।
এই পরিস্থিতে তারেক রহমান আদৌ আর বাংলাদেশের নাগরিক কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে দেশের মানুষের মধ্যে। সব মিলে এই মুহূর্তে রীতিমতো ছন্নছাড়া অবস্থায় বিএনপি। খালেদা জিয়া জেলে, তাঁর ছেলের দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন। আগামী সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কার নেতৃত্বে লড়বে বিএনপি, সেটাই এখন দেশের বিরোধীদের কাছে একমাত্র প্রশ্ন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.