মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেনের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে কৃষকদের ১২০ টি মামলা খারিজ করল গুজরাত হাইকোর্ট

মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত বুলেট ট্রেন প্রকল্পে সরকারের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে কৃষকদের দায়ের করা ১২০ টি মামলা নাকচ করল গুজরাত হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হচ্ছেন কৃষকরা।
২০১৭ সালে মুম্বই-আহমেদাবাদ হাই স্পিড বুলেট ট্রেন প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। কিন্তু দেশের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য কৃষকদের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ১২০ টিরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছিল গুজরাত হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার এই সবকটি মামলাই নাকচ করে দেয় গুজরাত হাইকোর্ট।
কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের জমির দাম নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগেই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, জমির বিনিময়ে এখন যে টাকা তাঁদের দেওয়া হচ্ছে তা ২০১৩ সালের জমি অধিগ্রহণ আইন মেনে হচ্ছে না। ২০১১ সালের জমি বাজার দরে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ। গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি এ এস দাভে ও বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণবের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কৃষকদের জন্য আরও বড় ক্ষতিপূরণের রাস্তা খোলা আছে। তাই যাঁরা তাঁদের জমির বিনিময়ে আরও বেশি অর্থ চান, কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারেন। পাশাপাশি, কৃষকদের আরও একটি অভিযোগ ছিল, বুলেট ট্রেন প্রকল্পটি মহারাষ্ট্র ও গুজরাত, দুই রাজ্যের মধ্যে বিভক্ত। তাই জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে একা গুজরাত সরকার নোটিস জারি করতে পারে না। সেই মামলাও খারিজ করে দিয়েছে গুজরাত উচ্চ আদালত। গুজরাত হাইকোর্ট জানায়, স্টেট অ্যাক্ট অনুযায়ী নোটিস জারি করেছে গুজরাত সরকার। পাশাপাশি, বিচারপতি এ এস দাভের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হিসাব প্রক্রিয়াও একেবারে স্বচ্ছ।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পরিবহণমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য কাটা পড়বে ৫৪ হাজার ম্যানগ্রোভ। যা নিয়ে বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা। যদিও গুজরাত হাইকোর্ট এই বুলেট ট্রেন প্রকল্পে সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে বেসরকারি এজেন্সি ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের (এনএইচএসআরসিএল) ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জিকা) গাইডলাইন মেনে পরিকল্পনামাফিক প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ গুজরাত হাইকোর্টের। জাপানের এই এজেন্সি মুম্বই-আহমেদাবাদ হাই স্পিড রেল প্রজেক্টের সহযোগী হিসাবে কাজ করছে।
যদিও গুজরাত হাইকোর্টের এই রায়ে হতাশ কৃষকরা। মামলাকারী কৃষকদের পক্ষে আইনজীবী আনন্দ ইয়াগনিক বলেন, দক্ষিণ গুজরাতের কৃষকরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

Comments are closed.