দুই শীর্ষ সিবিআই অফিসারকেই পাঠানো হল ছুটিতে, ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত গুজরাত ক্যাডারের আস্থানাকে বাঁচাতেই কি এই সিদ্ধান্ত, উঠছে প্রশ্ন

সিবিআই-এর অন্দরে নজিরবিহীন দ্বৈরথের জেরে দুই শীর্ষ কর্তা, সংস্থার প্রধান অলোক ভার্মা এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা, দুজনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দিল কেন্দ্র। তার বদলে সংস্থার জয়েন্ট ডাইরেক্টর এম নাগেশ্বর রাওকে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য সিবিআই প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হল। মঙ্গলবার মধ্যরাতে তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। গোটা বিষয়টাতে প্রশ্ন উঠছে, সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মা যখন ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত স্পেশাল ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন, সেই সময় তাঁকে সরিয়ে দেওয়ায় সিবিআই-এর অন্দরে দুর্নীতির তদন্ত লঘু হয়ে যাবে না তো?
সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মা এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার হাত থেকে সমস্ত ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন নির্দেশ জারি করার পরই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল। স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ নিয়ে খোদ সিবিআই মামলা শুরু করায় দেশের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অন্দরে নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হাওয়ালায় অভিযুক্ত এক মাংস ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এই মামলায় সিবিআই আস্থানার সহযোগী এক সিবিআই ডিএসপিকে গত সোমবার গ্রেফতারও করে। এরপরই আস্থানা মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া এফআইআর-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাঁকে আগামী সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানায় আদালত।
পাশাপাশি, আস্থানাও সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিবকে। গোটা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরই অলোক ভার্মা স্পেশাল ডিরেক্টর আস্থানাকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেন কেন্দ্রের কাছে।
এই পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টি যেদিকে যাচ্ছিল, মোদী-অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আস্থানাকে গ্রেফতারও পর্যন্ত করা হতে পারে, এই অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তাই আর অপেক্ষা না করে সিবিআই-এর দুই শীর্ষ অফিসারকেই ছুটিতে পাঠানো ছাড়া কেন্দ্রের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন উঠছে, গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস অফিসার আস্থানাকে বাঁচাতেই কি তাঁর পাশাপাশি সিবিআই প্রধান অলোক প্রধানকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার?

Comments are closed.