‘উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্র দেয় ২০ টাকা, আমরা দিই ৮০ টাকা’, দক্ষিণ ২৪ পরগানার সভা থেকে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর

২০ টাকা ওরা দেয়, আমরা দিই ৮০ টাকা। ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, কেন্দ্র টাকা তো দেয়ই না, উপরন্তু রাজ্য থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সভায় মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের নোটবন্দির জন্য ৪০ শতাংশ বেকার বেড়েছে সারা দেশে। তা স্বত্ত্বেও রাজ্য সরকার সবরকম চেষ্টা করেছে কর্মসংস্থান বাড়ানোর। এদিনের সভা থেকে মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তিনি। দেশজুড়ে কৃষক আত্মহত্যা ও অসন্তোষের জন্য বিজেপি সরকারকে কাঠগোড়ায় তোলেন মমতা।
পাশাপাশি, এরাজ্যের আর্থ সামাজিক পরিকাঠামো উন্নতিতে পূর্বতন বাম সরকারের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাম সরকারের বিশাল দেনার বোঝা কাঁধে নিতে হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যের উন্নয়নে কোনও খামতি রাখা হয়নি। রাজ্যের সব শ্রেণীর মানুষকে সুবিধা দিয়েছে সরকার, আগামীতেও সবার পাশে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস।
বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের পরিষেবা প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন তিনি। গতিধারা প্রকল্প, সেলাই মেশিন বিতরন, খাদ্যসাথী প্রকল্পসহ একাধিক প্রকল্প পরিষেবা উপভোক্তাদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরবাজার এলাকায় ৩ জন মৃত্যু প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে মমতা মৃতদের পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সরকারি প্রকল্পের আওতায় আনার নির্দেশ দেন দলীয় সংগঠনকে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অবস্থান দেখে তাঁর সরকার পক্ষপাতিত্ব করে না। ফের, মমতার ভাষণে আসে বর্তমান দেশের কৃষক অসন্তোষের কথা। এরাজ্যের কৃষকদের কোনও অভাব অভিযোগে সর্বদা তিনি পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বলেন এক লক্ষ কৃষককে ভাতা দিই আমরা। গরিবদের জন্য ৪০ লক্ষ বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে মমতা বলেন, বাম আমলের দেনা শোধ করেও উন্নয়ন থেমে থাকেনি। কুম্ভমেলার পরে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম হয় যে মেলায়, তা হল গঙ্গাসাগর মেলা। ২০-৩০ লক্ষ লোক জলপথ পেরিয়ে আসেন এই মেলায়। তাই গঙ্গাসাগরকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
আসন্ন লোকসভায় বিজেপিকে মানুষ ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে বলে জানান তিনি। মমতা বলেন, বিজেপির নেতারা উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে। সংখ্যালঘু এবং আদিবাসীদের উপর অত্যাচার করছে। মেরুকরণের রাজনীতির ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বিজেপি। হনুমান কী ছিল তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই পশ্চিমবঙ্গের। বাঙলা সবার জন্য। এখানে ভেদাভেদ চলবে না বলে সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.