নিরপেক্ষ সিবিআই এখন মেরুদণ্ডহীন বিজেপিতে পরিণত হয়েছে, শ্রীকান্ত মোহতা গ্রেফতারের পর আক্রমণাত্মক মমতা

নিরপেক্ষ কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই শিরদাড়া ভেঙে বিজেপির দলদাসে পরিণত হয়েছে। সিবিআই-এর বিরুদ্ধে এভাবেই তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার, পরপর কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় সিবিআই ও বিজেপিকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি লেখেন, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এই ‘তৎপর’ হয়ে ওঠা আসলে পদ্ম শিবিরকে সাহায্য করার জন্য। ট্যুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, একটা নিরপেক্ষ এজেন্সি এখন মেরুদণ্ডহীন বিজেপিতে পরিণত হয়েছে। এর আগে ১৯ শে জানুয়ারি ব্রিগেডে বিরোধী মহাজোটের মঞ্চ থেকেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এজেন্সিকে অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন ফারুক আবদুল্লা, অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদব প্রমুখ দেশের প্রথম সারির নেতা। ওই মঞ্চে মমতা বলেছিলেন, বিজেপির অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সিবিআই, ইডি আর ইনকাম ট্যাক্স লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে মুখ বন্ধ করার যতই চেষ্টা চলুক, বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের এই লড়াই চলবে বলে আক্রমণ শানান তিনি।
ঘটনাক্রমে, বৃহস্পতিবার সিনেমা প্রযোজক তথা তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। শুক্রবার তাঁকে ভুবনেশ্বরে সিবিআই আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবারই হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার রোহতকের বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ট্যুইট বার্তায় কারও নাম না করে সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি আর একটি ট্যুইটে লেখেন, অখিলেশ যাদব থেকে মায়াবতী, সবার বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সর্বত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিজেপি ব্যবহার করছে সিবিআইকে। তাঁর প্রশ্ন, ভয় পেয়ে কি বিজেপি আরও মরিয়া হয়ে উঠছে? তাঁর কটাক্ষ, এভাবেই চলছে বিজেপির প্রতিহিংসা চরিতার্থ পর্ব। পাশাপাশি, সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে বেপরোয়া গতিতে যাওয়া সিবিআই-এর গাড়ির ধাক্কায় সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক আহত হওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিহারের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও ট্যুইটে একহাত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। তাঁর কথায়, সেন্ট্রাল ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন এখন বিজেপি ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোতে পরিণত হয়েছে। যাঁরাই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তাঁরা ক্লিনচিট পেয়ে রাজা হরিশচন্দ্র হয়ে গিয়েছে। আর যাঁরা কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আরএসএস ও বিজেপির বিরোধিতা করার জন্য, তাঁর বাবা লালু প্রসাদ যাদবকেও একইভাবে ফাঁসানো হয়ছে বলে দাবি তেজস্বী যাদবের। মমতা ও তেজস্বীর ট্যুইটের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও গলা মিলিয়েছেন। তিনি এক ট্যুইটে লেখেন, মোদী এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি দিয়ে রাজনীতির যুদ্ধ লড়তে নেমেছেন।

Comments are closed.