সিপিএম ২২, আরএসপি-ফরওয়ার্ড ব্লক-সিপিআই ৩ টি করে, সিপিআইএমএল লিবারেশন ১। বামেদের আসন চূড়ান্ত করল আলিমুদ্দিন

সিপিএম ২২ টি, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই ৩ টি করে এবং সিপিআইএমএল (লিবারেশন)কে ১ টি আসন দিয়ে বৃহত্তর বাম ঐক্য গড়ে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার রাস্তা একরকম চূড়ান্ত করে ফেলেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু এই গোটা প্রক্রিয়ায় বাধ সাধছে রায়গঞ্জ, মুর্শিদাবাদ এবং আরও ২-১ টি আসনে কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি। সূত্রের খবর, ২-৩ টি আসনে এই জট কেটে গেলেই আগামী মাসের শুরুতে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের জন্য মাঠে-ময়দানের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করে দেবে সিপিএম।
রাজ্যে যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট করতে চাইছে তা এই মুহূর্তে আর সূর্যকান্ত মিশ্রদের কাছে কোনও গোপন অ্যাজেন্ডা নয়। গত দু’তিনটি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকেই তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে খানিকটা আভাস দেওয়া হবে বলে সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রের খবর। যদিও পুরো বিষয়টিকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট আগামী ৩-৪ মার্চ কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংয়ের পরই জনসমক্ষে আনতে চায়। সূত্রের খবর, রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে কতগুলি আসনে সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই লড়াই করবে এবং কোন কোন আসন কংগ্রেসকে ছাড়া হবে তার একটা ফর্মুলা নিয়ে গত দু’তিন মাস ধরেই আলোচনা চালাচ্ছেন সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ঠিক করেছে, সিপিএম নিজে লড়বে ২২ টি আসনে। ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই যে ৩ টি করে আসনে লড়াই করে সেখানে তারাই প্রার্থী দেবে। আরএসপি যে ৪ টি আসনে লড়াই করে তার মধ্যে বহরমপুর আসনটি তারা কংগ্রেসকে ছেড়ে দেবে।
এতদিন পর্যন্ত সিপিএম ৩২ টি এবং শরিকরা ১০ টি আসনে প্রার্থী দিত। এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, আসন সমঝোতার স্বার্থে সিপিএম ২২ টি আসনে প্রার্থী দেবে। শরিকরা প্রার্থী দেবে ৯ টি আসনে। এবং বৃহত্তর বাম ঐক্যের স্বার্থে ১ টি আসন ছাড়া হবে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)কে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম এবং কৃষ্ণনগরের মধ্যে একটি আসন সিপিআইএমএল (লিবারেশন)কে ছাড়া হবে।
এই গোটা প্রক্রিয়ায় খানিকটা সমস্যা তৈরি হয়েছে গত ২০১৪ লোকসভায় সিপিএমের জেতা রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে। দুটি আসনেই কংগ্রেস প্রার্থী দিতে চায়। কিন্তু গোটা বিষয়টি যে রাজ্যস্তরে মিটবে না তা সিপিএম নেতারাও খানিকটা বুঝতে পারছেন। সূত্রের খবর, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই এই জটিলতা কেটে যেতে পারে। কিন্তু এই জটিলতা কাটলেই যে একশো শতাংশ মসৃনভাবে আসন সমঝোতা হবে তা কিন্তু নয়। জানা যাচ্ছে, সিপিএম এবং শরিকদের কিছু আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। সেই আসনগুলিতে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে। তাতে সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব বলতে পারবেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আসন সমঝোতা হয়েছে মাত্র, যা দলের রাজ্যভিত্তিক কৌশলগত লাইনের একটা অঙ্গ।

Comments are closed.