মমতার পর এবার ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ

লোকসভা ভোটের ফলের পরই ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে মমতার বক্তব্যে সহমত হয়েছেন দেশের বহু বিরোধী রাজনৈতিক দল। এবার ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএমও। দিল্লিতে সদ্য শেষ হওয়া দলের পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে একাধিক সদস্য ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং দলকে গুরুত্ব দিয়ে এই বিষয়টি দেখার দাবি তুলেছেন।
রবিবার দিল্লিতে শেষ হয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক। সেই বৈঠকেই সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত ৭-৮ জন সদস্য ইভিএম নিয়ে নিজেদের সন্দেহের কথা জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সরাসরি ইভিএম কারচুপির অভিযোগ না তুললেও, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সদস্য ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁদের দাবি, ইভিএম নিয়ে সন্দেহের কারণ খতিয়ে দেখুক পার্টি। তাঁদের বক্তব্য, ইভিএম নিয়ে চারপাশে একটি সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, একাধিক সাংবাদিকের যুক্তি এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁরা বলেন, এই সমস্ত পত্রপত্রিকা, সাংবাদিক বা বিশেষজ্ঞরা যে অভিযোগ করছেন, তার সত্যতা খতিয়ে দেখা উচিত। না হলে ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের ধোঁয়াশা কাটবে না।
সিপিএমের অন্দরে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সময়েই তাৎপর্যপূর্ণভাবে দলের মুখপত্র ‘পিপলস ডেমোক্রেসি’র সর্বশেষ সংখ্যায় ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রবন্ধ লিখেছেন সিপিএম নেতা নীলোৎপল বসু। ৯ ই জুন সিপিএমের মুখপত্র ‘পিপলস ডেমোক্রেসি’তে প্রকাশিত সেই প্রবন্ধে সামগ্রিকভাবে বিরোধীদের ইভিএম সংক্রান্ত অভিযোগ আরও একবার তুলে ধরার পাশাপাশি তিনটি প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ইভিএমের নির্মাতা ইসিআইএল এবং বেল নির্বাচন কমিশনের কাছে যতগুলি ইভিএম পাঠিয়েছে, আর নির্বাচন কমিশন যত ইভিএম এই সংস্থা দুটির কাছ থেকে গ্রহণ করেছে, তার হিসেবে গরমিল রয়েছে বলে দাবি করেছেন নীলোৎপল বসু। অতিরিক্ত মেশিনগুলো কোথায়? পাশাপাশি একাধিক সংবাদমাধ্যমের নাম তুলে ধরে নীলোৎপল বসুর দাবি, ভোট গণনাতেও হিসেব মিলছে না। প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে ভোটদাতার সংখ্যা এবং ভোট গণনার পরিমাণে মিল নেই। নির্বাচন কমিশন এখনও এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। সিপিএম প্রশ্ন তুলেছে ইভিএমে ব্যবহৃত মাইক্রো চিপ নিয়েও।
প্রবন্ধে লেখা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে সাধারণ মানুষের এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে হবে। ভারতের মতো বিশাল দেশে, যেখানে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট হয় ইভিএমের সাহায্যে, সেখানে ইভিএম নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলে আগে তার উত্তর দেওয়া উচিত।

Comments are closed.