ব্রিগেডের বক্তা তালিকায় চমক সিপিএমের। ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত, সেলিমের সঙ্গে বক্তা আদিবাসী নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম

৩ রা ফেব্রুয়ারি বামেদের ব্রিগেড, আর এই ব্রিগেড সমাবেশে বক্তা তালিকায় বড় চমক দিতে চলেছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সাংসদ এবং পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম ছাড়াও আর একজনকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবার ব্রিগেডে বক্তার তালিকায় রেখেছে, যা এই সময়ে রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি দেবলীনা হেমব্রম। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের প্রাক্তন বিধায়ক, আদিবাসী নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম এবার লোকসভার আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিগেড সমাবেশে বক্তা হিসেবে থাকবেন। কিন্তু কেন তাঁকে বক্তা হিসেবে বাছলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা?
২০১৬ বিধানসভা ভোটের পর থেকেই রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করার লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে বিজেপি। তা সে তমলুক, কোচবিহার, উলুবেড়িয়া লোকসভা উপনির্বাচন হোক কিংবা দক্ষিণ কাঁথি, নোয়াপাড়া, মহেশতলা, সবং বিধানসভা উপনির্বাচনই হোক। সর্বত্রই সিপিএমকে সরিয়ে বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তা আরও স্পষ্ট হয়। এবং আরও একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া তো বটেই জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদহের আদিবাসী এলাকাগুলিতে বামেদের যুগ যুগ ধরে যে একচ্ছত্র সাংগঠিক ভিত্তি ছিল সেখানেই বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বিজেপি। বামেদের আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া এলাকার ভোটে কীভাবে এত ধস নামল এবং বিজেপি কীভাবে সেখানে এত শক্তিশালী হয়ে উঠল, বহু ভেবেও সেই পরিস্থিতির সামাল দিতে পারেনি সিপিএম।
২০১৮ পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলার সবকটি ব্লক এবং পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বহু জায়গায় তৃণমূলকে হারিয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। একই অবস্থা জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাতেও। এই অবস্থায় আদিবাসী মানুষের মধ্যে একটা ইতিবাচক বার্তা দিতে ইতিমধ্যেই দলে দেবলীনা হেমব্রমের গুরুত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এবারের ব্রিগেড সমাবেশে বক্তা তালিকাতেও রাখা হয়েছে তাঁকে। সিপিএমের শেষ ব্রিগেডে মহিলা বক্তা ছিলেন রেখা গোস্বামী। কিন্তু এবার একদিকে মহিলা, অন্যদিকে আদিবাসী মানুষকে বার্তা দেওয়া, দুটি বিষয়কে মাথায় রেখেই বাছা হয়েছে দেবলীনা হেমব্রমের নাম।
এবার উল্লেখযোগ্যভাবে শারীরিক কারণে ব্রিগেডে থাকবেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বুদ্ধদেববাবু গৃহবন্দি। পার্টি অফিসেও যেতে পারেন না। সূত্রের খবর, এবার ব্রিগেডে থাকবেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ঠিক হয়েছে, ১৭ টি দলের এই ব্রিগেড সমাবেশে সব দলের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদকরা বক্তা থাকবেন। সভার সভাপতি থাকবেন বিমান বসু। সিপিএম থেকে থাকবেন ৪ জন বক্তা। সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম এবং দেবলীনা হেমব্রম। একমাত্র সিপিআই দলের বক্তা দু’জন। সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও কানহাইয়া কুমার। বাকি সব দল থেকে বক্তা এক জন করে।

Comments are closed.