জেরবার দিল্লি: দূষণ মোকাবিলায় গাজর খাওয়ার নিদান কেন্দ্রীয় স্বাস্থমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের, যজ্ঞ করতে বললেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বলছেন সকালে উঠে গাজর খেতে। কারণ, তাতে আছে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম ছাড়া আরও অনেক উপাদান। তাঁর মতে, এগুলিতে নাকি দূষণরোধী শক্তি আছে। আবার উত্তরপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী সুনীল ভারালা দিল্লির সরকারকে দূষণের হাত থেকে বাঁচতে যজ্ঞ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ইন্দ্রদেবকে সন্তুষ্ট করলেই দূষণ থেকে রেহাই মিলবে। এই নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে নানা রসিকতাও শুরু হয়েছে। দিল্লির বাসিন্দারা বলছেন, আমরা মরছি আমাদের জ্বালায়। আর ওই নেতা, মন্ত্রীরা যত সব হাবিজাবি কথা বলে চলেছেন।

এদিকে বেশ কিছুদিন পর, সোমবারই প্রথম দিল্লিতে রোদের দেখা মিলেছে। দূষণের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। আবহাওয়া দফতর বলছে, সোমবার ভোর থেকে অল্প অল্প বাতাস বইছে বলেই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে বাতাসে দূষণের পরিমাণ সিভিয়ার ক্যাটেগরিতেই রয়েছে। ভোরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৪৩৮।
দিল্লি প্রশাসন মঙ্গলবার পর্যন্ত শহরের সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছিল গত সপ্তাহেই। সেই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে খবর। এখন দিল্লিতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। রাজধানীর পরিবেশ দূষণ ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কয়েক দিন আগে ওই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সোমবার থেকে শহরে অড নাম্বার গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। এরই পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলির দূষণ নিয়ে একে অপরের উপর দোষ চাপানো চলছেই।
প্রতিবেশী রাজ্য পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশে দিওয়ালির আগে ফসলের নাড়া পোড়ানোর কারণে দিল্লির বায়ুদূষণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে। আগে থেকে তিন রাজ্যের সরকারকে সাবধান করা সত্ত্বেও তারা এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। এমনই অভিযোগ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। তবে বায়ুদূষণে নাড়া পোড়ার কোনও ভূমিকা দেখতে পাচ্ছেন না যোগী সরকারের মন্ত্রী সুনীল ভারালা। তাঁর দাবি, কৃষকরা বহু আগে থেকেই এই নাড়া পোড়ার রীতি চালিয়ে আসছেন। এ নিয়ে সমালোচনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ট্যুইটারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের পরামর্শ, দূষণ থেকে বাঁচতে সকাল শুরু হোক গাজর খেয়ে। তবে যজ্ঞ করে বা গাজর খেয়ে যে দিল্লির দূষণ থেকে রেহাই মিলবে না, তা বুঝতে পারছে দিল্লির আমজনতা। কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত ট্যুইট করে জানান, অবসরের পর দিল্লিতে নয়, তিনি কেরলে গিয়ে বাকি জীবন কাটাতে চান।

Comments are closed.