চিনের একচেটিয়া ব্যবসা ঠেকাতে নয়া উদ্যোগ, কোনও পণ্য দেশে উৎপাদিত কি না লিখতে হবে, ই-কমার্স নীতিতে বদল আনছে কেন্দ্র

ভারত-চিন দ্বন্দ্বের মধ্যেই দেশজুড়ে  তীব্র হচ্ছে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক। এই আবহে ৩০০ টির বেশি বিদেশি পণ্যের শুল্ক বৃদ্ধি ও আমদানিতে রেশ টানার মতো পদক্ষেপ করছে কেন্দ্র। চিনা পণ্যের রমরমা ঠেকাতে  এবার আরও এক পা এগোল ভারত। নয়া ই-কমার্স পলিসির মাধ্যমে চিনা পণ্য আমদানি বন্ধ করতে চলেছে কেন্দ্র। কী সেই পলিসি?

সূত্রের খবর,  সরকারের তরফে সমস্ত ই-কমার্স সংস্থাকে জানানো হচ্ছে,  যে পণ্য তারা বিক্রি করছে তার প্যাকেটের গায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে সেটি দেশজ কিনা। অর্থাৎ, পরোক্ষভাবেও চিনা পণ্যকে ভারতীয় বাজারে কোণঠাসা করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।

এমনটাই দাবি করা হয়েছে ইংরেজি দৈনিক ইকনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে। সরকারের এক উচ্চ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন জানাচ্ছে, এ দেশে ব্যবসা করা সব ই-কমার্স সংস্থাকে বাধ্যতামূলকভাবে দেখাতে হবে যে, তাদের বিক্রিযোগ্য প্রোডাক্ট ভারতে তৈরি কিনা। এ ব্যাপারে কড়া নজর দেবে কেন্দ্র এবং এভাবেই চিনা জিনিসের বিক্রি রোধ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্চে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে ভারত থেকে ব্যবসা করে ৪৭ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত তুলেছে চিন। ভারত-চিন দন্দ্বের মধ্যে এ দেশের বাজারে চিনের একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকের কথায়, এবার পণ্যের গায়ে একটা ‘চেক মার্ক’ রাখা হবে, যার মাধ্যমে ক্রেতারা বুঝতে পারবেন তা দেশজ উৎপাদিত দ্রব্য কি না। কেনাকাটার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ক্রেতাদেরই। তবে এই পৃথকীকরণ জরুরি বলে জানাচ্ছেন ওই কেন্দ্রীয় আধিকারিক।

তিনি যোগ করেন, খুব শীঘ্রই এই নীতিটি জনসমক্ষে আনা হবে সবার মতামতের জন্য।

শিল্প প্রচার ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য দফতরের তরফে গত বছর ই-কমার্স সংস্থাগুলির জন্য যে খসড়া দেওয়া হয় তাতে বলা হয়েছিল, বাধ্যতামূলকভাবে সংস্থার ওয়েবসাইটে সমস্ত পণ্যের যাবতীয় বিবরণ দিতে হবে। তাতে এও প্রস্তাব দেওয়া হয়,  পণ্য উৎপাদনকারীর পুরো নাম, ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিশদ বিবরণ সরবরাহ করতে হবে। বলা হয়, বিক্রেতারা যে পণ্যগুলি বিক্রি করছে তার সত্যতা সম্পর্কে ক্রেতাদের সঠিক তথ্য দেওয়া জরুরি।

এদিকে ভারত-চিন দ্বন্দ্বের মধ্যে সরকার যে  ই-কমার্স পলিসি কড়াকড়ি করতে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ক্যাম্পেনের উপরই জোর দেওয়া হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। সূত্রের খবর, নয়া ই-কমার্স পলিসিতে যারা আবশ্যিক বিধি মানবে না বা ভুল তথ্য দেবে, তার শাস্তি বিধানের জন্য নিয়ন্ত্রকও রাখা হতে পারে। নয়া পলিসিতে আলাদাভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে দেশের ই-কমার্সের বৃদ্ধি, বেকারদের চাকরি, গ্রামীণ উৎপাদনশীলতা এবং রফতানির প্রচারের উপর।

 

 

Comments are closed.