বার্ধক্য-বিলাসের ফেস অ্যাপ কি তথ্য চুরির ফাঁদ? যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে রাশিয়ান সংস্থার হাতে? এফবিআই তদন্তের দাবি মার্কিন সেনেটে

বুড়ো হতে বড়ই আনন্দ। মোবাইলে ফেস অ্যাপের সৌজন্যে এবার বার্ধক্য-বিলাসে মেতেছে ভার্চুয়াল জগৎ। যৌবন ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টায় যাঁদের রাতের ঘুম ছুটতো নিত্য, জেনে রাখুন, বুড়ো হওয়াই এখন লেটেস্ট ট্রেন্ড। নিজের বার্ধক্যের চেহারা পছন্দ না হলে অবশ্য আছে আরও বিভিন্ন অপশন। ছেলে থেকে মেয়ে বা যৌবন থেকে আবার এক লাফে কৈশোরে ফেরত যাওয়া, ফেস অ্যাপের মহিমায় আজ সবই যেন জলবৎ। বিনা মেহনতে এমন বার্ধক্য-বিলাসে এখন মাতোয়ারা নতুন প্রজন্ম। কিন্তু এই অ্যাপ ঘিরে ভার্চুয়াল দুনিয়ার আকাশে আশঙ্কার কালো মেঘের ঘনঘটা।
ফেস অ্যাপ নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড মার্কিন মুলুকে। সেনেটে ফেস অ্যাপ নিয়ে প্রবল শঙ্কার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আশঙ্কার মূল কারণ, অ্যাপটি তৈরি করেছে একটি রাশিয়ান সংস্থা। তাই আপনাকে বুড়ো সাজিয়ে আদতে বুরবক বানানোর রাশিয়ান চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে ঘর পোড়া গরু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার স্মৃতি যে আজও উজ্জ্বল। এটাও কি রাশিয়ার তেমনই কোনও চাল?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই ব্যবহার করে এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দিয়েছে বিনামূল্যের বুড়ো সাজার কেতা। তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অ্যাপ বিনামূল্যে ব্যবহারের বিনিময়ে ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে ফেলছেন। শুধু তাই নয়, ফেসবুকে তাঁর বন্ধুদের তথ্যও তুলে দিচ্ছেন সংস্থার সার্ভারে। ওই অ্যাপে তিনি যত ছবি ব্যবহার করছেন, সেগুলিও সংস্থার কাছে চলে যাচ্ছে। পরে প্রয়োজন অনুসারে সেই তথ্য যে আপনার বিরুদ্ধেই ব্যবহার হবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই অবস্থায় ফেস অ্যাপ নিয়ে এফবিআইকে তদন্ত করতে বলেছেন মার্কিন সেনেটের মাইনরিটি লিডার চাক শ্যুমার। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের ওয়্যারলেস ল্যাব সংস্থা অ্যাপটি তৈরি করে বাজারে ছেড়েছে। তাদের যদিও দাবি, তথ্য চুরি করে বিক্রি করা অ্যাপের উদ্দেশ্য নয়। তবুও আশ্বস্ত হতে পারছেন না শ্যুমার। ট্যুইটারে একটি চিঠি পোস্ট করে তিনি এফবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রযুক্তি কলামিস্ট জিওফ্রে এ ফওলার তাঁর প্রতিবেদনে দেখিয়েছেন কী অনায়াস হাসির ছলে বিদেশি শক্তির হাতে চলে যেতে পারে আপনার যাবতীয় তথ্য। এমনকী অ্যাপটি ডিলিট করে দিলেও রেহাই নেই।
ভারতে অবশ্য অ্যাপটি নিয়ে মাতামাতির পাল্লাই ভারি, তবে খুব বেশি দেরি হওয়ার আগে আশঙ্কার দিকগুলো নিয়েও চিন্তা শুরুর পরামর্শ দিচ্ছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

Comments are closed.