ফেসবুক পোস্টে দেশদ্রোহ খুঁজে পেল না আদালত, পুলিশের আবেদন খারিজ করে মণিপুরের আদালতের জামিন ছাত্রনেতা ভিওনকে

ফেসবুক পোস্টে বিরোধিতার অর্থ দেশদ্রোহিতা নয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে গ্রেফতার হওয়া মণিপুরের ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর করল মণিপুরের একটি আদালত।
কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় গত কয়েক মাস ধরেই উত্তাল উত্তর-পূর্ব। বিভিন্ন সংগঠন ও দল এই বিলের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে নেটিজেনরা পোস্ট করছেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের ছাত্রনেতা ভিওন থকচম একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। পোস্টে ভিওম লেখেন, ”মণিপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি হয়েছে। পাঁচদিন ধরে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। স্থানীয় চ্যানেলগুলোতে বিক্ষোভের ছবি বা ভাষণ শোনাতে বারণ করা হয়েছে। সন্দেহ হচ্ছে, আজ রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করানো হবে। ২০০১ সালে রাজ্য বিধানসভা পোড়ানো হয়েছিল। আত্ম সংকল্পই এগিয়ে যাওয়ার উপায়।”
তাঁর এই পোস্ট নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। পড়াশুনোর জন্য দিল্লিতে থাকা ভিওন থকচমের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করে মণিপুর পুলিশ। ১৬ ই ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ শে ফেব্রুয়ারি পূর্ব ইম্ফলের দায়রা আদালতে পেশ করা হয় এই ছাত্রনেতাকে। আদালতে ভিওন থকচমের ২২ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার আবেদন জানায় পুলিশ। যদিও এই আবেদন খারিজ করে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট লিংথৌজাম লানলেইমা। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ওই ফেসবুক পোস্টের কোন অংশে হিংসাত্মক বা আপত্তিকর কোনও কথা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে ভিওন থকচমকে দেশদ্রোহী বলা হবে। সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে, আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে ভিওন থকচমকে একটি ফেসবুক পোস্টের নিরিখে দেশদ্রোহী বলা যায় না।‘ পুলিশ হেফাজতের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ভিওনকে জামিনের আবেদন করতে বলেন বিচারক। তারপরই জামিনে মুক্তি পান উত্তর-পূর্বের এই ছাত্রনেতা।
এর আগে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে বিখ্যাত অসমিয়া সাহিত্যিক হীরেন গোহেন ও কেএমএসএস নেতা অখিল গগৈয়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। যদিও গুয়াহাটি হাইকোর্টের নির্দেশের পর জামিন পান তাঁরা।

Comments are closed.