আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের উৎসব বোনাসের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, ‘দুর্যোগ যাবে-আসবে, উৎসব থেমে যাবে না

করোনাভাইরাস অতিমারি এবং তার জেরে সৃষ্ট অভূতপূর্ব আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেই সরকারি কর্মীদের জন্য বোনাস ও উৎসব অগ্রিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, দুর্যোগ যাবে আসবে, তা বলে উৎসব থেমে থাকবে না। ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ৪,২০০ টাকা অ্যাড হক বোনাস পাবেন। যা ২০১৯ সালে ছিল ৪ হাজার টাকা।
অতিমারির মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বোনাস পাওয়ার ক্ষেত্রে বেতনের ঊর্ধ্বসীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে যাঁদের বেতন ৩০ হাজার টাকা ছিল একমাত্র তাঁরাই অ্যাড হক বোনাস পেতেন। এবার সেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৩৪ হাজার ২৫০ টাকা করা হয়েছে।
একইভাবে সরকারি কর্মচারীরা উৎসব বাবদ যে অগ্রিম অর্থ নিতেন, তাও বাড়ানো হয়েছে। আগে ৮ হাজার টাকা উৎসব অগ্রিম নিতে পারতেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। এবার সেই অর্থ বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা করা হয়েছে। যে সমস্ত কর্মীদের বেতন ৩৪,২৫০ টাকা থেকে ৪১,১০০ টাকার মধ্যে তাঁরাও এই অগ্রিমের সুবিধা পাবেন বলে জানান মমতা। পেনশনভোগীরাও এই উৎসব অগ্রিম পাচ্ছেন। উৎসব অগ্রিম পাওয়ার ক্ষেত্রে পেনশনের টাকারও ঊর্ধ্বসীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে যাঁরা ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত পেনশন পেতেন, তাঁরাই কেবল উৎসব অগ্রিম পেতেন ২ হাজার ১০০ টাকা করে। এবার ২৯ হাজার ৭০০ টাকার উপরেও যাঁদের পেনশন, তাঁরা ২ হাজার ২০০ টাকা করে উৎসব অগ্রিম নিতে পারবেন।
ইদের সময় মুসলিম সরকারি কর্মীদের ও পরে দুর্গাপুজোর সময় হিন্দু সরকারি কর্মীদের এই বোনাস ও অগ্রিম দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। আর এই বোনাস এবং উৎসব অগ্রিমের ঘোষণার ফলে ১০ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষা, পঞ্চায়েত, পুরকর্মী উপকৃত হবেন বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এর ফলে রাজ্য সরকারের ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্ট লাইন ওয়ারিয়র বা ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, সাংবাদিকদের জন্য করা ১০ লক্ষ টাকার বিমার মেয়াদ বাড়িয়ে জুলাই পর্যন্ত করে দেওয়া হয়েছে।

Comments are closed.