বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভোট, আরও ২৫ কোম্পানি বাহিনী আসছে রাজ্যে

বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তির খবর পাওয়া গেলেও মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই মিটল প্রথম দফার ভোট। এদিন রাজ্যের কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, বিকেল চারটে পর্যন্ত কোচবিহারে ৬৮.৪৬ শতাংশ এবং আলিপুরদুয়ারে ৭১.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গের দুই কেন্দ্র কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে শুরু হয়ে যায় সাধারণ নির্বাচন। এদিন সকালেই কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন বুথে একাধিক ইভিএম খারাপ। এর নেপথ্যে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন, বলেও সকালে অভিযোগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। অভিযোগের কথা তিনি জেলা শাসককেও জানান। কমিশনের তরফে ইভিএমে গোলমালের কথা স্বীকার করা হলেও দ্রুত তা সারিয়ে ফের ভোটগ্রহণ শুরু করা হয় বলে জানানো হয়। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজের ভোট দিতে ঢুকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। মন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভোট যন্ত্রের কাছে চলে যাচ্ছেন, যা কমিশনের নিয়ম বিরুদ্ধ। পাশাপাশি সীমান্তের কাজ ছেড়ে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষকে বিএসএফ বিরক্ত করছে বলেও অভিযোগ তৃণমূল নেতার। অন্যদিকে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট চললেও সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কোচবিহার কেন্দ্রেরই দিনহাটার রসমণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে গোলমাল শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, ভোট শুরুর ঘণ্টাখানেক পর দিনহাটার রসমণ্ডা স্কুলের বুথে ভোটারদের মারধর করেন তৃণমূলের কর্মীরা। বাধা দিতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন এক বিজেপি কর্মী। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই মারধরের অভিযোগ করে। পরে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি সাংবাদিকদের জানান, দিনহাটায় একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে যায় পুলিশ ও বাহিনী। তারপর থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হয়েছে দিনহাটার রসমণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে, বলেও জানান তিনি। দিনহাটার একটি বুথে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। এক্ষেত্রে তৃণমূল ও বিজেপি, উভয়েই একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। ওই বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছে তৃণমূল। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে কোচবিহার কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন এলাকায়। তা নিয়ে চলে বিজেপি ও তৃণমূলের চাপানউতোর। কোচবিহারের বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায়ের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সামগ্রিকভাবে জেলা প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, বলে সূত্রের খবর। দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে রাজ্যে আরও ২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে বলে কমিশন সূত্রের খবর।

Comments are closed.