কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় মৃত এ রাজ্যের ৫ বাঙালি শ্রমিক, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর, সাহায্যের আশ্বাস

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের কাশ্মীর সফরের মধ্যেই ফের রক্তাক্ত উপত্যকা। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ গেল এ রাজ্যের ৫ শ্রমিকের। পৃথক এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক বাঙালি শ্রমিক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে শ্রীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার বহালনগর গ্রামের প্রায় ১৫ জনের একটি দল কাশ্মীরের কুলগামে শ্রমিকের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রতি বছরই আপেল বাগিচায় কাজ করতে কাশ্মীর যেতেন তাঁরা। এঁরা ভাড়া ছিলেন কুলগামের কটরাসু গ্রামের একটি কাঠের বাড়িতে। মঙ্গলবার বিকেলে সেই ঘরে ঢুকেই এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৫ বাঙালি শ্রমিকের। সিআরপিএফ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম শেখ কামরুদ্দিন, শেখ মহম্মদ রফিক, শেখ মুরসুলিন, শেখ নিজামুদ্দিন ও মহম্মদ রফিক শেখ। ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে সেনার ১৮ নম্বর ব্যাটেলিয়ন ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।
এই নিয়ে গত ক’দিনের মধ্যে আপেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ৯ জনের প্রাণ গেল জঙ্গি হামলায়। এই জঙ্গি হামলার পেছনে পাক মদত রয়েছে বলে দাবি সেনার। অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকালে পুলওয়ামার আধা সেনার ক্যাম্প লক্ষ্য করেও গুলি চালায় জঙ্গিরা। যদিও এতে হতাহতের কোনও খবর নেই।
অগাস্ট মাসে উপত্যকা থেকে বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেওয়ার পর উপত্যকার পরিস্থিতি দেখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা সেখানে যান। ঠিক এই সময় জঙ্গি হামলা ঘটিয়ে সন্ত্রাসবাদীরা নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে চাইল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তবে মঙ্গলবারের এই ঘটনায় কোন জঙ্গি সংগঠন যুক্ত রয়েছে তা এখনও পরিষ্কার হয়নি।
উপত্যকায় গিয়ে ৫ বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীও তাঁর জেলার ৫ বাসিন্দার মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারত সরকারের দেওয়া ভরসায় রুটিরুজির জন্য কাশ্মীরে গিয়ে প্রাণ দিলেন বাংলার শ্রমিকরা।

 

Comments are closed.