৩ দশক ধরে জমি পড়ে, এক চুল কাজ হয়নি গাওস্করের ক্রিকেট অ্যাকাডেমির জমি ফেরত চায় মহারাষ্ট্র সরকার

৩১ বছর আগে পাওয়া জমি কাজে লাগানো হয়নি। এই অভিযোগে সুনীল গাওস্করের মুম্বইয়ে ক্রিকেট অ্যাকাডেমির জমি ফিরিয়ে নিতে চলেছে মুম্বই প্রশাসন (Gavaskar Land Controversy)। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় ২১ হাজার ৩৪৮ বর্গফুট জায়গা দেওয়া হয়েছিল সুনীল গাওস্কর ক্রিকেট ফাউন্ডেশন ট্রাস্টকে (এসজিসিএফটি)। কথা ছিল, সেখানে গড়ে উঠবে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। কিন্তু তিন দশক কেটে গেলেও অ্যাকাডেমির কাজই শুরু হয়নি। তাই  ওই জমি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ করছে মহারাষ্ট্র হাউজিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমএইচএডিএ)।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমএইচডিএ-র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিলিন্দ মহিস্কর বলেন, তাঁদের তরফ থেকে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে গাওস্কার ফাউন্ডেশনের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তিনি জানান, ৩১ বছর আগে বান্দ্রার ওই জমি বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ার কাজ শুরুই হয়নি। তাই গাওস্করের ট্রাস্টের জন্য বরাদ্দ ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি (Gavaskar Land Controversy) চেয়েছে এমএইচএডিএ।
সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, বান্দ্রার রঙসারদা অডিটোরিয়ামের কাছে একটি জমি লিজ দেওয়া হয় এসজিএফটিকে। চুক্তি অনুযায়ী, ৬০ বছরের জন্য ওই জমি দেওয়া হয় গাওস্কারের ট্রাস্টকে। চুক্তিতে বলা হয়, ওই জায়গায় একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি হবে। যে শর্তে এই জমি বরাদ্দ করা হয়, তা ১৯৯৯, ২০০২ এবং ২০০৭ সালে সংশোধনও হয়। কিন্তু অ্যাকাডেমির কাজ এত বছরেও এক কণাও এগোয়নি।
সূত্রের খবর, গত ২৪ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের বাসভবনে আমন্ত্রিত ছিলেন ‘লিটল মাস্টার’। তাঁদের ‘গোপন’ বৈঠক নিয়ে কোনও কিছু জানা না গেলেও, ২৭ ডিসেম্বর রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশিস শেলার একটি চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই চিঠিতে তিনি মহারাষ্ট্র হাউসিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্টের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে আশিস শেলার লেখেন, এসজিসিএফটি-কে জমি বরাদ্দ ও আপনার সঙ্গে গাওস্কারের সাম্প্রতিক বৈঠক প্রসঙ্গে এই চিঠি। তিনি লেখেন, জমি বরাদ্দের পর বহুবার সুনীল গাওস্কার জমির লিজ সংক্রান্ত চুক্তি বদলে কিছু সুবিধা চেয়ে আবেদন করেন এবং বিগত সরকার তা মেনেও নেয়। তা সত্ত্বেও গাওস্কর জমি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেননি, এমনকী জমি দখলমুক্ত রাখার জন্য কোনও ব্যবস্থাও নেননি। গাওস্কারের ভারতীয় ক্রিকেটে অবদান  এবং মুম্বই তথা ভারতবাসীকে গর্বিত করার জন্য তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে শেলার লেখেন, এসব বাদ রাখলে দীর্ঘ তিন দশক ধরে তাঁর অধিকৃত জমি কোনও কাজে না লাগানোর জন্য এমএইচএডিএ যে পদক্ষেপ করছে, তাতে পূর্ণ সমর্থন করছি।
সম্পতি ওই জমি বেদখল হয়ে যাওয়ার খবরে নড়েচড়ে বসে এমএইচএডিএ। সূত্রের খবর, ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ম্যানেজার তথা বর্তমান জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট দলের কোচ লালচাঁদ রাজপুতের হাতে ওই জমি তুলে দেওয়ার ভাবনা-চিন্তা চলছে। বহুদিন ধরে ক্রিকেট অ্যাকাডেমির জন্য জমি চেয়ে আবেদন করে আসছেন লালচাঁদ।

যদিও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গাওস্করের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বলে দাবি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনের।

Comments are closed.