পুরভোট নিয়ে আলোচনা করতে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে রাজভবনে ডাকলেন রাজ্যপাল

পুরভোট নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ২৭ ফেব্রুইয়ারি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সোমবার নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে রাজ্যপাল এ কথা জানিয়েছেন।
পুরভোট কবে হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু জানায়নি রাজ্য সরকার। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার মোটামুটি ভাবে ১২ এপ্রিল কলকাতা এবং হাওড়া কর্পোরেশনের ভোট করতে চায়। বাকি ১১০ টি পুরসভার ভোট এপ্রিলের শেষ দিকে সেরে ফেলতে চায় নবান্ন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের আটটি পুরসভা নিয়ে পৃথক একটি কর্পোরেশন গড়ার কথা ভাবা হয়েছে। আসানসোল এবং বিধাননগর কর্পোরেশনের সঙ্গে নবগঠিত ব্যারাকপুর কর্পোরেশনের ভোট পুজোর পরে অক্টোবর মাসে করার পক্ষপাতী নবান্ন।
তবে সরকারি ভাবে কমিশন ভোট নিয়ে কিছু জানায়নি। সোমবার পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চায়নি যে, কবে তারা ভোট করতে চায়। আইন অনুযায়ী এটাই নিয়ম। রাজ্য সরকার দিনক্ষণের সম্ভাব্য সময় জানালে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন চূড়ান্ত নির্ঘণ্ট ঠিক করবে। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। গত সপ্তাহে হাওড়া, দুই ২৪ পরগনার জেলাশাসকদের এবং কলকাতার নির্বাচনী আধিকারিকদের ডেকে ভোটের জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ভোটকর্মী নিয়োগের ব্যাপারেও প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। সম্ভবত ২৭ তারিখেই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। প্রস্তুতি এবং তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিও। বিজেপি আবার ভোটের মরসুমে ভোটের বিরোধী। তাদের বক্তব্য, পরীক্ষার সময় ভোট হলে মাইক নিয়ে প্রচার চালানো যাবে না। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হবে ৩০ মার্চ। ১২ এপ্রিল ভোট হলে মাত্র দিন দশেক সময় পাওয়া যাবে ভোটের প্রচারে। তারা এ নিয়ে আদালতে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছে। রাজ্য বিজেপির এক প্রতিনিধিদল সম্প্রতি কমিশনে গিয়ে বলে এসেছে, ভোট যেন পরীক্ষার মরসুমে না হয়।
এদিকে গত শনিবার শিলিগুড়িতে রাজ্যপাল বলেন, পুরভোটে এবং আগামী বিধানসভা ভোটে রাজ্যের পুলিশ ও আমলারা সংবিধান মেনে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ না করলে তাঁদের পরিণাম হবে গুরুতর। সংবিধানের মৌলিক কর্তব্যের অংশটি পড়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সেটা পড়ে আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে, আমরা কোথায় যাচ্ছি? তখন আপনার মনে হবে, পশ্চিমবঙ্গে হিংসার কোনও স্থান নেই। তাঁর প্রশ্ন, নিজেদের ঘরে কেউ আগুন লাগায়? সবার কাছে আমার নিবেদন, হিংসা বর্জন করুন। এর পরেই ধনখড় বলেন, রাজ্যের অতীত বলছে ভোটে হিংসার কথা। সামনেই পুরসভা এবং বিধানসভার ভোট। পুলিশ অফিসার এবং আমলাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তাঁরা পক্ষপাতদুষ্ট হলে চূড়ান্ত অব্যবস্থা হবে। রাজ্যপাল হিসেবে আমাকে দেখতে হবে, পুলিশ-প্রশাসন যেন সংবিধান মেনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখে। সংবিধান না মানলে গুরতর পদক্ষেপ করতে হতে পারে।

Comments are closed.