সিঙ্গুরে লম্বা সময় কাটাতে চান রাজ্যপাল! নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন ধনকড়, সীমা ছাড়াবেন না, রাজ্যপালকে নাম না করে হুঁশিয়ারি মমতার

এবার সিঙ্গুরে গিয়ে লম্বা সময় কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আমার সিঙ্গুর সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানার অধিকার আছে। এই মন্তব্য করে রাজ্যপাল ফের নতুন করে নবান্নের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন। আবার নবান্নের নাম না করেই রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মুখে। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে কেউ কেউ সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছে। এটা ঠিক নয়। কেন্দ্রের যেমন নির্বাচিত সরকার রয়েছে, তেমনি রাজ্যেও নির্বাচিত সরকার আছে। সব সরকারই যাতে নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারে, সংবিধানে সে কথাই বলা আছে। সেটা যেন সকলে মাথায় রাখেন।
বিতর্কের সূত্রপাত গত সোমবার। বিশ্বভারতীর সমাবর্তন থেকে ফেরার পথে রাজ্যপাল আচমকাই সিঙ্গুর ২ নম্বর বিডিও অফিসে ঢুকে পড়েন। সেখানে তখন বিডিও সহ কোনও সরকারই অফিসারই ছিলেন না। তাতে রাজ্যপাল কিছুটা বিরক্তও হন। তিনি সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। হুগলি প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই সময় স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রাজ্যপালের কাছে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানান। তাঁরা রাজ্যপালকে বলেন, এখানে কৃষিও হল না, শিল্পও হল না। আপনি কিছু একটা করুন। তখন সেখানে কয়েকজন বিজেপি সমর্থকও ছিলেন। এ নিয়ে নবান্ন ক্ষোভ প্রকাশ করে। প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, ফেরার পথে রাজ্যপাল সিঙ্গুরে বিডিও অফিসের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারেন বলে তাঁর দফতর থেকে জানানো হয়। কিন্তু সেখানে বসে যে ধনকড় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন, সে রকম কোনও খবর প্রশাসনের কাছে ছিল না। রাজ্যপাল স্থানীয়দের জানান, সিঙ্গুর সম্পর্কে তাঁকে আরও অনেক কিছু জানতে হবে। রাজ্যপালের এই আচরণের বিরুদ্ধে ওই দিনই সিঙ্গুরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দলীয় বিধায়ক বেচারাম মান্নার সঙ্গে অনেক মহিলাও ছিলেন।
এরপরই বৃহস্পতিবার কলকাতায় পার্কস্ট্রিটে জওহরলাল মূর্তিতে মালা দেওয়ার পর রাজ্যপাল সাংবাদিকদের কাছে সিঙ্গুর প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন সিঙ্গুর সম্পর্কে জানতেই আমি সোমবার বিডিও অফিসে গিয়েছিলাম। আমি যখন যে জেলায় যাই, সেখানকার জেলা শাসকের সঙ্গে আগে কথা বলি। সিঙ্গুরের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তৃণমূলের বিক্ষোভ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মহিলা সমর্থকরা সেদিন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাঁরা যেন জেনে রাখেন, আমি আমার অধিকার লঙ্ঘন করিনি। এবার ঠিক করেছি, আমি টানা কয়েকদিন সিঙ্গুরে থাকব।
শাসক দল অনেক দিন ধরেই বলে আসছে, রাজ্যপাল তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করে চলেছেন। আর রাজ্যপালও বরাবরই দাবি করে আসছেন, তিনি এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেই কাজ করছেন। সীমা লঙ্ঘন করছেন না। মঙ্গলবার শান্তিপুরে রাস উৎসবে গিয়ে রাজ্যপাল জানান, তিনি সীমার বাইরে যান না। সমুদ্রসীমা ছাড়ালে প্রলয় হয়। তিনি সীমাতেই থাকেন।
ফের রাজ্যপাল-শাসক দলের সংঘাতের বাতাবরণ, ক্ষুব্ধ মমতা

Comments are closed.