রাজ্যপালের প্রশাসনিক বৈঠকে নেই রাজ্য প্রশাসন-তৃণমূল, কীভাবে কাজ করব তা কেউ বলে দিতে পারে না, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য জগদীপ ধানকরের

রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে শেষ হল শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক। বৈঠক শেষে রাজ্য প্রশাসনের অনুপস্থিতি নিয়ে ঘুরিয়ে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধানকর। বলেন, হয়ত সবারই একসঙ্গে কাজ পড়ে গিয়েছিল। বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। এই প্রেক্ষিতেই রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের পাল্টা দাবি, এই বৈঠকে হাজির হওয়ার কোনও আমন্ত্রণ তাঁর কাছে আসেনি।

এখানেই প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। রাজ্যপাল নিজের বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রীর অনুপস্থিতির কথা। অথচ শিলিগুড়ির বাসিন্দা বর্তমান পর্যটনমন্ত্রী দার্জিলিং জেলার বিধায়ক নন। তিনি জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক। ফলে দার্জিলিং জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁর হাজির হওয়ার কথা নয়। পর্যটনমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার জন্য গৌতম দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চেম্বার অফ কমার্স ভবনের উদ্বোধনে হাজির হওয়ার আমন্ত্রণ পত্র তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় তিনি যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারবেন না, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি গৌতম দেবের। জেলাওয়াড়ি প্রশাসনিক বৈঠকে তৃণমূলের তরফে একমাত্র হাজির হওয়ার কথা ছিল রাজ্যসভা সাংসদ শান্ত ছেত্রীর। কিন্তু তিনিও এদিন গরহাজির ছিলেন।

গত ২১ শে সেপ্টেম্বর রাজভবনের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, ২৪ শে সেপ্টেম্বর রাজ্যপাল ধানকর সরকারি সফরে শিলিগুড়ি যাবেন এবং সেখানে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনের পর প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে থাকবেন জেলা শাসক, সাংসদ, জেলার সমস্ত বিধায়ক, শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের মেয়র এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি। যেভাবে প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের অন্দরে। কারণ, দার্জিলিংয়ের সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়ক, মেয়র, সভাধিপতি সকলেই হয় বিজেপি, নয়তো সিপিএম বা কংগ্রেসের প্রতিনিধি।

এদিন রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, তিনি কীভাবে কাজ করবেন, তা স্থির করার দায়িত্ব একান্তভাবেই তাঁর নিজের। আর তাঁর এই মন্তব্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি রাজ্যপাল এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে দূরবর্তী কোনও ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করলেন?

যাদবপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই সংঘাতে জড়িয়েছে রাজভবন। এবার শিলিগুড়িতে রাজ্যপালের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যের জেরে সংঘাতের জল কোনদিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।

Comments are closed.