পেশাদারি ঈর্ষার জন্যই কি খুন হলেন মুম্বইয়ে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট?

২০০৭ সালে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে যোগ দেওয়ার পর থেকেই হচ্ছিল দ্রুত পদোন্নতি। কয়েক বছরের মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসেডেন্ট পদমর্যাদায়। কর্মস্থলে এই দ্রুত উত্থানই কি কাল হল মুম্বইয়ের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ সংভীর? অফিসের পেশাদারি শত্রুতার জেরে প্রাণ দিতে হল মুম্বইয়ে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ৩৯ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্টকে? প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে মুম্বই পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় সরফারোজ শেখ নামে এক ট্যাক্সি চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সরফারোজই খুন করেছে সিদ্ধার্থ সংভীকে। কিন্তু তাকে খুন করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল মাত্র। জেরা করা হচ্ছে সিদ্ধার্থর চার সহকর্মীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের এই উচ্চ পদস্থ আধিকারিক। মার্কেট রিস্ক ও ক্রেডিট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সংভী গত বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার একটু পরে কমলা মিলসের অফিস থেকে বেরোন। তার কিছুক্ষণ পর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বারবার ফোন করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তাঁর স্ত্রী পুলিশে নিখোঁজ ডায়ারি করেন। স্ত্রী এবং ৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে দক্ষিণ মুম্বইয়ের মালাবার হিল এলাকায় থাকতেন সংভী।
এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্টের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার খবরে নড়েচড়ে বসে পুলিশও। পরদিন সংভীর মোবাইল ফোন অন হতেই, টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ নবি মুম্বই এলাকায় একটি বহুতলের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় তাঁর গাড়ি উদ্ধার করে। গাড়িতে মেলে রক্তের দাগ, গাড়ির সিট থেকে একটি রক্ত মাখা ছুরিও উদ্ধার হয়। তদন্তে পুলিশ সরফারোজ শেখ নামে এক ট্যাক্সি চালককে গ্রেফতার করে। সে জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করেছে বলে পুলিশের দাবি। তাকে জেরা করেই সোমবার ৩৯ বছর বয়সী সিদ্ধার্থের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কর্মস্থলে ঈর্ষার কারণেই খুন হতে হয়েছে সিদ্ধার্থকে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে মার্কেট রিস্ক এবং ক্রেডিট বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষ সিদ্ধার্থর দ্রুত পদোন্নতি হচ্ছিল ব্যাঙ্কে। এবছরও তিনি প্রমোশন পান, যা অন্য কিছু সহকর্মীর ঈর্ষার কারণ হয়েছে বলেই মনে করছে মুম্বই পুলিশ।
ধৃত সরফারোজকেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে সিদ্ধার্থর অফিসের চার সহকর্মীকে জেরা শুরু করেছে। তার মধ্যে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের এক মহিলা কর্মীও রয়েছেন। তদন্তকারীদের অনুমান, সিদ্ধার্থের অফিসের সহকর্মীরা এই খুনের পরিকল্পনা করে থাকতে পারেন। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিদ্ধার্থর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট। উচ্চপদস্থ এই ব্যাঙ্ক অফিসারের হত্যা ঘিরে যথেষ্ট আলোড়ন ছড়িয়েছে বাণিজ্য নগরিতে।

Comments are closed.