রাজ্য থেকে ১০ দিনে উদ্ধার ৬ কোটি টাকা! পুরোটাই ‘কালো’ বলছে কমিশন, উৎস সন্ধানে আয়কর দফতরকে নির্দেশ

লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা হয়েছে ১০ই মার্চ। তারপর ১০ দিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হল প্রায় ৬ কোটি টাকা, যার পুরোটাই কালো টাকা। কালো টাকার জোগান বৃদ্ধিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ নির্বাচন কমিশনের। কোথা থেকে এত কালো টাকা আসছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য আয়কর দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে প্রায় ৮ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল নির্বাচন কমিশন। আর লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার ক’দিনের মধ্যে ৬ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে কমিশন।
১১ ই মার্চ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয় আয়কর দফতর। পুলিশের ফ্লাইং স্কোয়াডও অভিযান শুরু করে। সূত্রের খবর, আয়কর দফতর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫ কোটি ১৯ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। পুলিশ উদ্ধার করেছে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে, এ পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মোট ২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে খাস কলকাতা থেকে। এছাড়া আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট থেকেও ভালো অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর।
এখন এই বাজেয়াপ্ত টাকার উৎস খুঁজছে আয়কর দফতর। ইতিমধ্যেই প্রথম ও দ্বিতীয় দফা ভোটে ৬ জন এক্সপেন্ডিচার অবজারভার এ রাজ্যে চলে এসেছেন। লোকসভা ভোটে আইনশৃঙ্খলা সহ টাকা লেনদেনের উপর বিশেষ নজর রাখছে কমিশন। দেশের বিমানবন্দর ও রেল কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বেশি পরিমাণ টাকা নিয়ে কেউ যাতায়াত করলেই আয়কর দফতর ও নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। কালো টাকার মতো বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারেও অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৯৮টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে ২৯৫টি। বিভিন্ন জেলা থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে ৬৮টি।  ২০৮৭ লিটার বেআইনি মদ এবং ৩৫৬ লিটার দেশি মদ উদ্ধার হয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে গড় হিসেব করে কমিশন দেখেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভোটার পিছু খরচ করেছিল ৬ টাকা করে। এবার তা বাড়ে কিনা, সেদিকে নজর রাখছে কমিশন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত রিপোর্ট এবং কালো টাকা উদ্ধারের হিসেব দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Comments are closed.