জামিয়ায় গুলি চালানো ‘নাবালকে’র বয়স কত? স্কুলের মার্কশিটের সঙ্গে মিলছে না ভোটার লিস্টের তথ্য!

রাজধানী দিল্লির জামিয়া এলাকায় সিএএ বিরোধী পড়ুয়াদের মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে ধরা পড়েছে জনৈক রামভক্ত গোপাল। গ্রেফতার হওয়ার পর জানা যায়, বন্দুকবাজ নাবালক। এই মর্মে সংবাদসংস্থার তরফে দেওয়া হয় একটি স্কুলের মার্কশিট। তাতে স্পষ্ট দেখা যায় বন্দুকবাজের বয়স। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বন্দুকবাজের মুখ ব্লার করা এবং আসল নাম গোপন করা হয়। এরপরই ঘটনায় আসে আসল ট্যুইস্ট।

ঘটনার দিনদুয়েক পর প্রকাশ্যে আসে ধৃত রামভক্তের ভোটার তালিকায় নাম থাকার প্রমাণ। প্রশ্ন ওঠে, ভোটাধিকার পেতে হলে বয়স হতে হয় ন্যূনতম ১৮, তাহলে নাবালক সেই অধিকার পায় কী করে? তাহলে কি বয়সে জল মেশানো? নাকি জামিয়ায় বন্দুকবাজির ধারা লঘু করতেই সাবালককে নাবালক হিসেবে দেখানোর অভিসন্ধি? কোনটা সত্যি? তৈরি হয় ব্যাপক বিভ্রান্তি।

ঘটনাত্র দিনই সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের তরফে রামভক্ত গোপালের স্কুলের যে সার্টিফিকেট দেখিয়ে দাবি করা হয়েছিল, হামলাকারী নাবালক, চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সেই নথিও। একটি নির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে যে স্কুলের কথা বলা হয়েছে, সেই স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিরই অস্তিত্ব নেই। এদিকে বন্দুকবাজ যে ভোটাধিকার প্রাপ্ত, তার প্রমাণ বাইরে চলে আসে।

এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন ওঠে, কী উদ্দেশ্যে জামিয়ার বন্দুকবাজকে নাবালক দেখানোর চেষ্টা? নাকি ভোটের নথি বলে যে কাগজের দাবি করা হচ্ছে, তাতেই রয়েছে কোনও গরমিল? এদিকে স্কুলের তরফ থেকে অবশ্য বন্দুকবাজকে ছাত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

বিরোধীরা অবশ্য অভিযোগ করছেন গোটা ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের একাংশের ভূমিকা নিয়ে। এএনআইকেও তোলা হচ্ছে কাঠগড়ায়।

সত্যিই কি জামিয়ার বন্দুকবাজ নাবালক? নথি পাল্টা নথির আবহে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সেই দাবিই। নাবালক কিংবা সাবালক, বন্দুকবাজ যাই হোক না কেন, তার মনে যে বিষ বাসা বেধেছে, তা দূর করাই এখন প্রাথমিক কাজ। কিন্তু যেভাবে প্রথমে স্কুলের নথি তারপর ভোটের নথি সামনে এল, তাতে একটা জিনিস পরিষ্কার, দুটি নথিই একসঙ্গে ঠিক হতে পারে না।

Comments are closed.