জামশেদপুরের টাটা মোটরস এক মাসের মধ্যে চতুর্থবার উৎপাদন বন্ধ রাখল, গত ২ মাসে কাজ বন্ধ ১৫ দিন করে

গাড়ি শিল্পে ভয়াবহ মন্দা, এক মাসের মধ্যে চতুর্থবার জামশেদপুরের কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখল টাটা মোটরস। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার উৎপাদন বন্ধ ছিল টাটা মোটরসে। রবিবার এমনিতেই ছুটির দিন, অর্থাৎ এক সপ্তাহের মধ্যে টানা ৪ দিন উৎপাদন বন্ধ রাখল দেশের অন্যতম গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, জামশেদপুরের আদিত্যপুরের শিল্প তালুক এই মুহূর্তে গভীর সঙ্কটে রয়েছে। প্রায় ৩০ টি স্টিল  প্লান্টও  পালা করে বন্ধ করা হচ্ছে, যার মধ্যে ডজন খানেক সংস্থার শাটার পড়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।
গাড়ি বাজারে ভয়ঙ্কর মন্দার মুখে দাঁড়িয়ে কয়েক মাস ধরে অটোমোবাইল সংস্থাগুলি পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বন্ধ রাখছে। লক্ষ্য একটাই, উৎপাদন বন্ধ করে যতটা সম্ভব লোকসানের বহর কমিয়ে আনা। এই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার, এক মাসের মধ্যে চতুর্থবার উৎপাদন স্থগিত রাখল টাটা মোটরস। স্থায়ী কর্মচারীদের আগামী ৫ ই অগাস্ট থেকে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অস্থায়ী কর্মীদের আরও ৭ দিন পরে, ১২ ই অগাস্ট থেকে কাজে ফেরার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মন্দার কারণে গত ২ মাস ধরে ১৫ দিন করে উৎপাদন করেছে টাটা মোটরস। কিন্তু এই মাসে তারও অর্ধেক করা হচ্ছে উৎপাদন। টাটা মোটরসের ইউনিয়নের দাবি, অগাস্ট মাসে মাত্র ১ সপ্তাহ কাজ করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যদিও টাটা মোটরসের তরফে আশা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বরের পর থেকে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে তারা। সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, অটোমোবাইল সেক্টরে মন্দা নতুন কোনও বিষয় নয়, প্রতি ৩-৪ বছর অন্তরই আসে। এবারেও আশা করা হচ্ছে, দ্রুত এই অবস্থা কেটে যাবে।
যদিও মারুতি সুজুকি থেকে টাটা মোটরস, দেশের একের পর এক প্রথম সারির মোটর গাড়ি উৎপাদনকারী সংস্থার পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বন্ধের ঘটনা আশঙ্কার কথাই বলছে। লোকসান কমাতে ইতিমধ্যে অস্থায়ী কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের এক তৃতীয়াংশ গাড়ি উৎপাদনকারী সংস্থা মারুতি সুজুকি। গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতা সংস্থা এসিএমএ তাদের গোটা দেশে ৫০ লক্ষ কর্মীর মধ্যে অন্তত ১০ লক্ষ কর্মী কাজ হারাতে পারেন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে, মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ শুল্কের স্টিল সেক্টরেও বিপর্যয় নেমে এসেছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিদ্যুতে ৩৮ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ঝাড়খণ্ড সরকার। যা এই বছরের এপ্রিল মাস থেকেই লাগু হয়েছে। এর ফলে জামশেদপুরের ২৫ থেকে ৩০ টি স্টিল প্লান্ট  পালা করে উৎপাদন বন্ধ রাখছে। সংস্থাগুলির দাবি, উৎপাদন খরচের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে আর দ্বিতীয় কোনও সমাধানসূত্র নেই তাদের হাতে। বৃহস্পতিবার থেকে প্রায় ১২ টি স্টিল প্লান্ট কাজ বন্ধ রেখেছে বলে খবর।

Comments are closed.